আর্কেশিয়া স্থাপত্য পুরস্কার ২০২৫-এ স্বর্ণ পদক পেলেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর

স্থাপত্যের জন্য এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার আর্কেশিয়া স্থাপত্য পুরস্কার ২০২৫ এ স্বর্ণপদক পেল “চাবি” প্রকল্পটি। বাংলাদেশের খ্যাতিমান স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর নকশা করেছেন এই প্রকল্পটি বিকল্প বাড়ি হিসেবে। তিনি সিস্টেম আর্কিটেক্টস এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান স্থপতি। এবার শাহ্ সিমেন্ট নির্মাণে আমি তে খ্যাতিমান এই স্থপতিকে নিয়ে প্রতিবেদন। লিখেছেন – মোহাম্মদ তারেক

স্বাধীন চিন্তা নিয়ে স্থাপত্য কর্মটি করতে পেরেছি, সেটি পুরস্কৃত হয়েছে, প্রশংসা পাচ্ছে। খুবই আনন্দের একটা অনুভুতি। এই প্রকল্পে “ফর্ম ফলোজ ফাংশন” প্রচলিত এই ধারণার বাইরে আমি যেহেতু বিশ্বাস করি, “ফর্ম ফলোজ ফিকশন” সুতরাং মানুষের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে কীভাবে স্থাপত্যকর্মকে সম্পৃক্ত করা যায়, সেই চেষ্টা করে মনে হচ্ছে কিছুটা সফলও হয়েছি। যে কোনো পুরস্কার সেটা দেশে বা বিদেশে হোক কাজের স্বীকৃতি, সম্মাননা পেলে দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে যায়। এই প্রকল্পটি ধারণা ভিত্তিক, নানান আইডিয়া বৈশিষ্ট্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে মানবিক অনুভূতিকে প্রভাবিত করে মনস্তাত্ত্বিক আকাশটাকে উম্মুক্ত রাখতে। আমি মনে করি নানা কারণে মানুষ এখন মানসিক চাপে আক্রান্ত, প্রতি মুহূর্তে নিজের সাথে প্রতারণায় লিপ্ত। যে কারণে তাদের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন আকাঙ্খাও কম। আমি স্থাপত্য পরিসরের বৈশিষ্ট্য হিসেবে যা কিছু যুক্ত করেছি , যেটা ব্যবহারকারীদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। এমন কাজের জন্য এই সম্মান বাংলাদেশের একজন স্থপতি হিসেবে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। তবে এই আনন্দের দাবিদার শুধু আমি নই, এই প্রজেক্টের সাথে সংশ্লিষ্ট তরুণ স্থপতিবৃন্দ, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, স্ট্রাকচারাল এবং অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং ও ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইনে সম্পৃক্ত সবাই আনন্দের দাবীদার। পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে এ কথা গুলো বললেন, খ্যাতিমান স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই একটা বিষয় জেনে খুশি হবেন, চলচ্চিত্রকার হিসেবে আমি কিন্তু ‘চাবি’ বাড়িতে “বানান” নামে একটি ছবি নির্মাণ করেছি। আড়াই ঘন্টার ছবি। মানুষের সাথে স্থাপত্যের সম্পর্ক, মানুষ মানুষের সম্পর্ক ও স্থপতির সাথে ক্লায়েন্টের সম্পর্ক ইত্যাদি সব কিছু মিলিয়ে সময় আর চারপাশের অনুভূতির সমীকরণ আছে এই ছবিতে। “বানান” ছবিটা আমি আদৌ রিলিজ দিতে পারবো কিনা জানিনা। নেপথ্যের গল্পটা হয়তো অনেকেই জানেন, আমার দ্বিতীয় ছবি “নমুনা” রাষ্ট্রীয় আইনী প্রক্রিয়ায় আটকে আছে দীর্ঘদিন। নমুনার পর আরো দুটি ছবি বানালেও অন্ধকারে পড়ে আছে অদ্ভূত একটা নিয়মের ফাঁদে।
এখন আমি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলাম। আমার “বানান” সিনেমাটা যদি রিলিজ হতো, সিনেমাটা দর্শকদেরকে দেখাতে পারতাম তাহলে কেন বাড়িটা আর্কিটেকচারে করলাম? আমাদের দেশের যারা সিনেমার মানুষ, তাদের স্থাপত্যের ওপর ধারণা হতো। যারা স্থপতি তাদের সিনেমার গল্প সম্পর্কে ধারণা তৈরি হতো। সিনেমাটা সেখানে আটকে গেল। আমরা অনেক মেধা ভিত্তিক কাজ চলমান আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে করতে পারি না।
প্রকল্পটির নাম কেন চাবি? জানতে চাইলে স্থপতি নির্ঝর বলেন, এই চাবি?
তালা- চাবি না! এই চাবি কথাটার মধ্যে একটা অধিকারও আছে। চাবি তবে পাবি! কী চাই? কার কাছে চাই? আমরা মূলত চাই দৃশ্যমান মানুষের কাছে। আর চাই অদৃশ্য শক্তির কাছে। নিজের কাছে চাইতে পারিনা আমরা। নিজের ভেতরে ভয় আছে। নিজের সাথে নিজের মোকাবেলা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এখানে এমন কিছু স্পেস আছে, এমন কিছু অনুভূতি আছে যেটা অটোমেটিক চলে আসে। প্রথমে চিন্তায় ছিলাম এটা করতে পারবো কি-না? এখানে উস্কানিমূলক প্রচুর জায়গা আছে। যেটা উস্কানি দেয় আসলে। আমাদের ক্লায়েন্ট মিল্টন ভাইয়ের ছেলেকে একদিন জিজ্ঞেস করলাম তুমি এখানে এসে কি কর? সে বলে, পায়চারি করি। ফোন ব্যবহার করো না? খুব কম, পাখির ডাক শুনি, কথা বলি নিজের সাথে, চিন্তা করি। এই একটা জায়গা থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে যে মানুষের আসলে পৃথিবীর সবচাইতে জরুরি মুহূর্ত উপলব্ধি করা। উপলব্ধির জন্য আমাদের আর্কিটেকচারটা মানুষ কীভাবে রিয়েক্ট করে?

Nirjor
স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর

সেটা বলতে পারেন এটা একটা চেষ্টা। যেখানে পদে পদে প্রশ্ন আসবে যেখানে জানার ইচ্ছা থাকবে তেমন কিছুই করতে চেয়েছিলেন স্থপতি নির্ঝর আর তার এই চাওয়ায় আগ্রহ দিয়েছিলেন মাহবুবুল ও নাসিমা দম্পতি।
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিরাব বাজার, পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে শীতলক্ষ্যা নদী। সেখানেই চার বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই বাড়ি। বাড়ির নাম “চাবি”। পারিবারিক বাড়িটিকে বলা হচ্ছে “বিকল্প গন্তব্য”।
বাড়ির সদর দরজা একটি হলেও বিভিন্ন দিক থেকে দোতলা বাড়িটির ভেতর – বাহির করা যায়। কোথাও দোতলার শয়নকক্ষ থেকে উঁচু টিলা ধরে বাড়ির সামনের বিশাল সবুজে নেমে আসা যায়। আবার কোথাও সরু হাঁটা পথ আপনাকে নিয়ে যাবে প্রশস্ত পুকুর পাড়ে। কোথাও বা বড় বড় ধাপে সবুজে গিয়ে মিলেছে সিঁড়ি।
বাড়ি জুড়েই খন্ড খন্ড সবুজ। আকাশ খোলা জলাধার। বাড়ির অন্দরেও আছে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ও দক্ষিণা হওয়ার মত প্রাকৃতিক উপাদানকে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা। তাই বলে অন্দরের গোপনীয়তা যে নষ্ট হয়েছে, তা কিন্তু নয়।
বাড়িটিকে কয়েকটি ভাগে এমন ভাবে ভাগ করা হয়েছে যে, চাইলে এক বা একাধিক ভাগ বন্ধ করে রাখা যায়। তাই ঘরের একটি অংশ বাহির পরিসর, অন্যটি পারিবারিক পরিসর। দুই পরিসরের মাঝামাঝি একটি করিডোর। করিডোরের মুখেই নেমে গেছে একখানা সিঁড়ি। সেটি পার হলেই তিনটি শোবার ঘর। একটিতে থাকেন চৌধুরী দম্পতি, অন্য দুটিতে তার দুই ছেলে মেয়ে। ব্যক্তিগত পরিসর বজায় রেখেও একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের স্থান যেন এই সরু করিডোর।
এই বিষয়ে স্থপতি নির্ঝর বলেন, কেউ যখন লম্বা করিডোরের এ পাশে, তখন তো সে ওই পাশে কী হচ্ছে দেখতে পাচ্ছেন না। তখন একজন হয়তো ছুটে গিয়ে দেখবে কে যায় ওপাশে। এই যে মুখোমুখি হওয়া, দেখা হওয়া, এটাই তো সব খোলামেলা রাখলে সম্ভব হতো না। তখন এক রুম থেকে বসেই দেখা যেত।উঠে গিয়ে এই যে যোগাযোগ, এটাই তো চাই।
বাড়িতে অতিথিদের জন্য দুটি, একটি খাবারঘর, একটি সুইমিং পুল, একটি ব্যায়ামাগার বা জিমনেশিয়াম, একটি হোম থিয়েটার, একটি অতিথি রুম, রান্নাঘর ও কর্মচারীদের জন্য একটি আলাদা ঘর রয়েছে। পুরো জায়গাটির সবকিছুই প্রকৃতিকে ভেঙে মানুষের হাতে গড়া। স্থপতি এখানে প্রকৃতি, মানব আবেগ এবং অনুভূতি নিয়ে কাজ করতে পেরেছেন।
আকাশ আর সূর্য: বসার ঘরের পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি জলাধার। উপরে তার উন্মুক্ত আকাশ, যাতে শুকনো আবহাওয়ায় জলের ওপর রোদের আলো পড়ে। আবার বর্ষার দিনে আকাশ থেকে বৃষ্টিরা নেমে যোগ দেয় সেই জলধারায়। কৃত্রিম আর প্রাকৃতিকের এক অনন্য মেলবন্ধনে সূর্য বা বৃষ্টি কোনোটাকেই দূরের বলে মনে হবে না।
দিনের আলো ঢোকার জন্য পুরো বাড়িতেই সূর্যের আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাড়িতে পাঁচটি স্নানঘর রয়েছে। স্নানঘরের একটি অংশ রাখা হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।যেন আলো না জ্বালাতে হয়, সেজন্য একটি পাশ রাখা হয়েছে খোলা ছাদের নিচে। এতে দিনের আলো যেমন স্নান ঘরে এসে ঢুকেছে তেমনি আসতে পারে রাতের জোসনা বৃষ্টির জল।
আবেগ, অনুভূতি আর অভিজ্ঞতা: বাড়ির পেছনে আছে একটি পুকুর। পুকুরটির পাশ দিয়ে একটি সরু অপ্রশস্ত হাঁটার পথ। ছোট এই জায়গাটি ধরে হাঁটতে থাকলে একসময় একটি বড় খোলা জায়গা চলে আসে, যা একটি সংকীর্ণ, আটকে থাকার পরিবেশ থেকে একটি খোলামেলা উন্মুক্ত পরিবেশে ঢোকার অনুভূতি দেয়।
স্বনামধন্য স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর বিশ্বাস করেন, ফর্ম ফলোজ ফিকশন, অর্থাৎ সাহিত্য বা সংস্কৃতির সাথে স্থাপত্যকে সংযুক্ত করা দরকার। স্থাপত্য মানে স্রেফ কংক্রিট, বালু, কাঠের সমন্বয়ে তৈরি একটি জড় অবয়বই না, স্থাপত্য নিজেই একটি শিল্প। কিন্তু সব স্থাপত্য শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছতে পারে না। সব ভবন কবিতার মতো হয় না। একটি বাড়ির স্থাপত্যের ওপর নির্ভর করে সে বাড়ির মানুষদের মন, রুচি ও সংস্কৃতি। কেননা একটা বাড়িতে যারা থাকবে, তাদের অনুভূতি আর সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়েই তৈরি হয়েছে বাড়িটির গঠন কাঠামো।
যেমন ঘরের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত এবং নিরাপত্তাবেষ্টিত জায়গা হলো বেডরুম। সবসময় কি বেডরুম একরকম হবে? বেডরুমে এখন আভিজাত্য ঢুকে গিয়ে নান্দনিকতা এসেছে ঠিকই। কিন্তু চলে গেছে এর ভেতরের অর্থ। আবার বেডরুম হলো ঘরের এমন একটি জায়গা যেখানে চাইলেই কেউ যেমন ঢুকতে পারবেনা, আবার বাইরে বেরোতে হলেও অন্যান্য ঘর পার হয়ে যেতে হবে।
সুখ-দুঃখের মাঝখানে ফাঁদ, বাস্তবতার নিয়মিত স্বাদ: একমাত্র কন্যার ঘরের প্রবেশদ্বার এমনভাবে রাখা হয়েছে, যেন পাহাড় বেয়েই ঘরের ভিতর প্রবেশ করা যাবে। আবার চাইলেই ঘর থেকেই বেরিয়ে পাহাড়ে নেমে যাওয়া যাবে। পাহাড়ের ওপরেই বেডরুমের সাথে লাগোয়া সিঁড়ি যুক্ত আছে, যেখানে চাইলে কেউ বসে থেকে পাহাড়ের স্বাদও নিতে পারবে। সুতরাং গন্তব্য এক হলেও, পথচলা ভিন্ন।
সম্পর্কের চর্চা: আবার বাড়িটিতে রাখা হয়েছে দু ধরনের সিঁড়ি। টানা সিঁড়ি ও জানা সিঁড়ি। যে সিঁড়ি একবারে গন্তব্যে নিয়ে গেল সেটি টানা সিঁড়ি। আর যেটি থেমে থেমে বা নিয়মিত সিঁড়িগুলোর মতো, সেগুলো জানা সিঁড়ি। সিঁড়ি গুলো কংক্রিট আর কাঠের তৈরি। পাশে কাঁচের দেয়াল, যেখানে দিনে আলো আছড়ে পড়ছে। এভাবে কংক্রিট আর কাঁচের এক দাম্পত্য তৈরি করেছেন, যেখানে অদৃশ্য বন্ধন হিসেবে কাজ করছে কাঁচের দেয়াল।
স্মৃতি প্রত্নতত্ত্ব: বাড়ির আরেকটি দর্শনীয় জায়গা হলো মেমরি টেমপ্লেট বা স্মৃতি প্রত্নতত্ত্ব। মাটির নিচে রাখা আছে রেডিও, সুরমাদানি, স্টেথোস্কোপ, ক্যাসেট প্লেয়ারের মতো বিভিন্ন পুরোনো সামগ্রী। বাড়ির পূর্ব পুরুষদের ব্যবহৃত নানা জিনিস পরমযত্নে এখানে সাজিয়ে রাখা আছে। অনেকটা জাদুঘরের মত। স্পটলাইটে জ্বলজ্বল করছে অতীত। মেজের নিচেই ছোট বাক্স করে এভাবে স্মারকঘর তৈরির বিষয় স্থপতি বলেন, বাড়ি যে সদস্যরা আর নেই, তাদের স্মৃতিটা প্রত্ন সামগ্রীর মতো। এসব জিনিস অনেকে শোকেসে রাখেন, পরিষ্কার করেন, স্পর্শ করেন। আমরা সেটিকে মেঝের নিচে রেখেছি। চাইলে কেউ ধরতে পারবে না।
বাড়ির নিচতলায় একটি বসার ঘর, রান্নাঘর, খাবারঘর আছে। একান্ত পারিবারিক আড্ডার জন্য দোতালয় রয়েছে আরেকটি বসার ঘর। প্রথম তলায়, যেখানে বৃষ্টি উপভোগ করা যায় এবং কেউ চাইলেই বাইরে বসে বৃষ্টি দেখতে পাবে, এমন প্রবেশ ব্যবস্থাও আছে। এছাড়াও নিচে গেস্ট রুম এবং রান্নাঘরের সাথে খোলা লম্বা জায়গাটি চারদিকে ছড়িয়ে গেছে। যেখানে পারিবারিক বসার ঘর।
বাড়ি যেমন নিজের কথা বলার জায়গা, তেমনি লুকিয়ে থাকারও জায়গা। সেখানে ঠিকানা-ডেস্ক নামে একটি পারিবারিক কাঠের তৈরি মঞ্চ আছে। পারিবারিক আসরে কেউ কিছু জানাতে চাইল, মঞ্চে উঠে বলবে।
বাড়িটির পরিকল্পনা করার সময় ছয় ঋতুর কথা মাথায় রেখে ল্যান্ডস্কেপ করেছিলেন স্থপতি এনামুল করিম। এই বাড়িতে এলে কারো মন খারাপ হবে, কারও আনন্দ হবে, কেউ অবাক হবেন। এই যে একেকজনের অনুভূতির দরজায় একেকভাবে টোকা দেওয়া, কংক্রিটের একটি স্থাপনার কাছ থেকে এর বেশি আর কি চাইতে পারি। ভাবনার বন্ধ ঘরের তালা খুলতে এর চেয়ে চমৎকার চাবি আর কী হতে পারে?