দক্ষিণ কোরিয়ায় রোবটের ‘আত্মহত্যা’: প্রশাসনিক কাজের চাপ নাকি অন্য কিছু?
২০২৪ সালের ২৬ জুন, দক্ষিণ কোরিয়ার গুমি শহরে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পাওয়া প্রশাসনিক রোবটটি একটি আকস্মিক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। রোবটটি, যেটি ‘সার্ভি লিফট’ নামে পরিচিত, দুই মিটার উঁচু সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এটিকে রোবটের ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছে এবং এর পেছনে প্রশাসনিক কাজের চাপ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোবটটি ২০২৩ সালের আগস্টে গুমি সিটি কাউন্সিলে নিয়োগ পায় এবং প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করত। এর কাজের মধ্যে ছিল নথি সরবরাহ, শহরের প্রচারণা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য প্রদান। ঘটনার দিন রোবটটিকে সিটি কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা সিঁড়ির পাশে ঘুরতে দেখেন, পরে এটি সিঁড়ি থেকে পড়ে যায়।
রোবটটির ভেঙে যাওয়া অংশগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রস্তুতকারী কোম্পানি বিয়ার রোবোটিক্স তা বিশ্লেষণ করবে। গুমি সিটি কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, রোবটটির আচরণের পেছনে প্রকৃত কারণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি এবং তদন্ত চলছে।
দক্ষিণ কোরিয়া রোবট ব্যবহারে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে প্রতি ১০ জন কর্মচারীর জন্য একটি শিল্প রোবট রয়েছে। গুমি সিটি কাউন্সিলের এই রোবটটি প্রশাসনিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত এবং সিটি হলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। তবে এই ঘটনার মাধ্যমে রোবটিক প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সীমাবদ্ধতাগুলি উঠে এসেছে।
গুমি সিটি কাউন্সিল আপাতত নতুন কোনো রোবট অফিসার নিয়োগের পরিকল্পনা করছে না। রোবটের ব্যবহারে সঠিক পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার গুরুত্বও এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।
এই ঘটনার পর রোবটিক প্রযুক্তির নৈতিক ও কার্যকরী দিকগুলি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং রোবটের ব্যবহার সম্পর্কে গভীর চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়েছে।