Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সাইফুরের স্থাপত্য জগত!

স্থাপত্যশিল্পে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন আ ফ ম সাইফুর রহমান। বুয়েট থেকে পড়াশোনা করেছেন। বুয়েটের পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৬ তিনি সালে যোগ দেন CAP নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্মে। এরপর ২০০১ সালে ‘স্থপতি সংসদ লিমিটেড’ এ যোগ দেন। সেখানে তিনি পাঁচ বছর চাকরি করেন। এ যাবৎ তিনি বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার ডিজাইন করেছেন। স্কুল জীবনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ছবি আঁকাআঁকি, বইপড়া ছিল তার পছন্দের বিষয়। মুকাভিনয়েও পারদর্শী ছিলেন। লেখালেখি করতেন। ‘ত্রিমাত্রা’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন। ২০১২ সাল থেকে এখনো পর্যšত্ম আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেড এ চীফ আর্কিটেক্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার শাহ সিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়েই প্রতিবেদন। লিখেছেন- মোহাম্মদ তারেক।

আর্কিটেক্ট আফম সাইফুর রহমান। তিনি ইট, কাঠ, বালু ও কংক্রিটের মাঝে খুঁজে ফেরেন প্রকৃতির সান্নিধ্য। আর তাই তার প্রতিটি স্থাপনায় থাকে সবুজের ছোঁয়া। প্রতিটি ডিজাইনের ক্ষেত্রে আলো বাতাস, সবুজ সহ প্রকৃতিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় আর্কিটেক্ট সাইফুরের বাড়ি পাবনা জেলায়। কিন্তু তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকার মিরপুর মাজার রোডে।  সাইফুর রহমানের বাবার নাম সামসুর রহমান। পেশায় তিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মা ফাতেমা খাতুন গৃহিনী। সাইফুর রহমানের ছবি আঁকাআঁকির বীজ ছোটবেলা থেকেই রোপন হয়েছিল। স্কুল জীবন থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। বইপড়া ও মুকাভিনয় ছিল তার পছন্দের বিষয়। তবে ছবি আঁকার ঝোঁকটা ছিল অনেক বেশি। ছোটবেলায় ড্রইং চর্চা করতে করতে আজকে তিনি হয়েছেন একজন সফল স্থপতি। বাবা-মায়ের উৎসাহ থেকেই আর্কিটেক্ট হওয়া তার।  ঢাকা রেসিডেন্সসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন ১৯৮৬ সালে। ১৯৮৮ সালে নটরডেম কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে। তার সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে আছেন স্থপতি বায়োজিদ, মামুন, রিমা, ফাহিম, পলাশ, রিয়াদ ও চম্পা।  এরা সবাই প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক্ট। প্রিয় শিক্ষকের তালিকায় আছেন স্থপতি শামসুল ওয়ারেস, ইঞ্জিনিয়ার শামীম উজ জামান বসু মিয়া। স্থপতি আ ফ ম সাইফুর রহমান বুয়েট থেকে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৯৬ সালে। পাস করে বের হওয়ার পরই যোগ দেন ‘CAP’ নামের একটি ফার্মে। সেখানে তিনি দেড় বছর চাকরি Green-Galleria,-Dhanmondiকরেন।  ১৯৯৮ সালে স্থপতি সাইফুর রহমান স্থাপত্য ও ম্যানেজমেন্টের ওপর পড়াশুনার জন্য পাড়ি জমান আামেরিকায়। ২০০১ সালে পড়াশোনা কমপ্লিট না করে দেশে ফিরে আসেন স্থপতি সাইফুর রহমান। দেশে এসেই তিনি যোগ দেন স্থপতি সংসদ লিমিটেড এ। সেখানে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে পাঁচ বছর চাকরি করেন। এরপর এম ডিএম আর্কিটেকচার কনসালটেন্সি ফার্মে একবছর চাকরি করার পর যোগদেন ‘র‌্যাগস’ এ। সেখানে তিন বছর চাকরি করেন।  ২০১২ সালে স্থপতি আফম সাইফুর রহমান যোগ দেন আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেডে। সেখানে তিনি চীফ আর্কিটেক্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি মধ্যপাচ্যের ‘হাইইফেল’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্মের সঙ্গে যুক্ত আছেন।  স্থপতি সাইফুর রহমান দেশের নামকরা রিসোর্ট, জিমনেশিয়ান, অডিটোরিয়াম, কমার্শিয়াল টাওয়ার, অফিস বিল্ডিং, কর্পোরেট অফিস সহ অসংখ্য ভবনের কাজ করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে- সিলেটের শাহজালাল ইউনিভার্সিটির শহীদ মিনার ও অডিটোরিয়াম, বগুড়ার স্পাইস রিচার্জ সেন্টার, বিক্রমপুরের র‌্যাংগস এর চেয়ারম্যানের বাসভবন, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের কেবি স্কয়ার, ফেনির হাজী আবু ইউসুফ পাটোয়ারীর বাসভবন, বারিধারার ব্রিটিশ হাই কমিশনের ক্লাব হাউজের বর্ধিত অংশ, জিমনেশিয়ামের বার্ধিত অংশ ও এন্ট্রি লাউঞ্জের ডিজাইন, আওলাদ হোসেন মার্কেটের র‌্যাংগস ভবনের প্রধান কার্যালয়, কলাবাগানের আমিন মোহাম্মদ ফাইন্ডেশন লিমিটেডের ‘গ্রীণল্যান্ড মার্ক টাওয়ার, আগারগাঁও এর এডিবি ভবন, চট্টগ্রামের প্রয়াস অ্যাপার্টমেন্ট, মতিঝিলের গ্রীন হান্নান টাওয়ার, কক্সবাজারের, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেডের ইনানী বীচ রিসোর্ট, উত্তরার রানাভোলা গার্ডেন স্কয়ার, গুলশানের কাদের হেভেন অ্যাপার্টমেন্ট বনানীর স্বপ্নীল অ্যাপার্টমের্ন্ট, আমিন মোহাম্মদ ফাইন্ডেশন লিমিটেডের নওয়াব গ্রীণ সিটিসহ অসংখ্য অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং। স্থপিতি সাইফুর রহমান তার সব ধরনের কাজ স্থাপত্যনীতি ও রাজউকের নিয়ম মেনেই করেন।  ১৯৮৯ সালে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম আফরোজা খানম। এই দম্পতি দুই সšত্মানের জনক-জননী।  সাইফুর রহমান বলেন, আমি চেষ্টা করি, আমার কাজ গুলোতে যেন স্থানের সর্বোচ্চ ব্যবহার উপযোগিতা থাকে এবং প্লান গুলো যেন সরল হয়। ভবন গুলোর বাসিন্দারা যেন আলো বাতাসের সুবিধা পান। তাদের জীবন স্বস্থিময় ও সুখী হয়। একইভাবে তিনি যেন নিজেকে বাইরের পরিবেশের সাথে সর্বদা সংযুক্ত আছেন- এমন ভাবতে পারেন। প্রতিবেশের কোনো ক্ষতি না হয় এবং তা আমাদের ধর্ম ও লোকাচারের সাথে যেন সংঘাত পূর্ণ না হয় সেদিকেও সর্তক দৃষ্টি রাখতে হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি কাজে নজর দেন স্থপতি সাইফুর রহমান সোহেল। পেশার কাছে কাছে দায়বদ্ধ থেকে সেটাকে সততার সাথে শেষ করতে চেষ্টা করেন। স্থাপত্য নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে স্থপতি সাইফুর রহমান বলেন, বর্তমানে আমি যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি, সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিজ্ঞা হচ্ছে ‘উমববর্ধণঢর্ ম ঠলধফঢর্ দণ ঠর্ণ্র’। এটাই আমার সাধনা। প্লানিং অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের প্রধান স্থপতি হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের সুবিশাল কর্মযজ্ঞ যেন সুন্দর ও সুচারুরূপে  বা¯ত্মবায়ন করা যায় এটাই আমার ভবিষ্যৎ স্থাপত্য চিšত্মা। দেশের মানুষের বাসস্থান, শিক্ষা, ব্যবসা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধার বা¯ত্মবায়নে আমি একজন ক্ষুদ্র অংশিদার হতে চাই।