Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

শাবনুর ও পূর্ণিমা এই আছি এই নাই…

শাবনূর ও পূর্ণিমা একটা সময় আমাদের চলচ্চিত্রের নির্ভরযোগ্য তারকা ছিলেন। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় তারা রাজত্ব করেছেন। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য শিল্পমান সম্পন্ন জনপ্রিয় ছবি। বিশেষ করে বানিজ্যিক চলচ্চিত্রে এই দুই তারকার গ্রহনযোগ্যতা এখনও ঈষর্নীয়। কিন্তু গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে এই দুই তারকা চলচ্চিত্র থেকে প্রায় ছিটকে পরেছেন তাদের পারিবারিক নানান ঝুট ঝামেলায়। যদিও শাবনূরের হাতে আছে নির্মাণ পর্যায়ে প্রায় ৫টি ছবি। অন্যদিকে পূর্ণিমার হাতে রয়েছে রয়েছে মাত্র একটি ছবি। তার কাছে প্রতিনিয়ত ছবির অফার নিয়ে যাচ্ছেন নির্মাতারা। কিন্তু পূর্ণিমা নির্মাতাদের সবিনয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তবে কী কারনে ছবির অফার ফিরিয়ে দিচ্ছেন সেটা বলছেন না।  শাবনূর গত ৫/৭ বছর ধরে অভিনয়ের ফাঁকে ফাঁকে অষ্ট্রেলিয়া যাওয়া আসা করছেন। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর আমাদের চলচ্চিত্র পাড়ায় চাউর হয় তিনি বিয়ে করেছেন। দেশে আসার পর তাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেশ করলে বেমালুম এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন। এসব ডাহা মিথ্যা। দুই বছর আগে হঠাৎ ছবির কাজ ফেলে চলে যান অষ্ট্রেলিয়ায়। ওই সময় ঢাকায় খবর আসে শাবনূর ছেলে সন্তানের মা হয়েছেন। অনেক জল্পনা কল্পনার পর তিনি দেশে আসেন ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে। ঘোষনা দেন ছেলের বয়স ছয় মাস হলে আবার নিয়মিত ছবি করবেন। এ আনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর কথা কিন্তু সেই ঘোষনা অনুযায়ী ছবির কাজ শুরু করতে পারেননি তিনি। অথচ তার হাতে যে ৫টি ছবি নির্মাণ পর্যায়ে রয়েছে তারও বয়স তিন বছরের বেশি। একেকটি ছবির বাজেট কোটি টাকা। এই বিপুল অংকের টাকার ছবি শুধুমাত্র শাবনূরের কারনে আটকে আছে। দীর্ঘদিন আগের এইসব ছবির গল্প পাত্র পাত্রী সহ সবকিছুই এখন পুরনো। তাই এই ছবি গুলো নিয়ে মহা চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন এর প্রযোজকরা।  বার বার সিডিউল দেয়ার পর সম্প্রতি তিনি বদিউল আলম খোকনের ‘পাগল মানুষ’ ছবির শূটিং করেছেন। কয়েকটি সিডিউলের কাজ করার পর তিনি আর শূটিং করবেন না বলে ঘোষনা দিয়েছেন।  এর কারন হিসেবে বলেছেন, সন্তান হওয়ার পর তার শরীর যে ভাবে মুটিয়ে গেছে তাতে শূটিং করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন। এখন দরকার ফিগার সুন্দর করে গড়ে তোলা।  শাবনূর এ মাসেই আবার অষ্ট্রেলিয়া যাবেন বলে জানিয়েছেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তার হাতের ছবি গুলোর কাজ শেষ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমানে শাবনূরের হাতে আছে বদিউল আলম খোকনের ‘পাগল মানুষ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর ‘অবুঝ ভালোবাসা, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘এমনও তো প্রেম হয়, নজরুল ইসলাম খানের ‘স্বপ্নের বিদেশ’ এবং সালাউদ্দিন লাভলুর একটি ছবিতে কাজ করার কথা রয়েছে তার।  নির্মাতারা বলছেন, শাবনূর অভিনীত নির্মাণ পর্যায়ে যে সব ছবি রয়েছে তার গল্প, পোষাক, চরিত্র সহ সার্বিক প্রেক্ষাপটই পরিবর্তন হয়েছে। এমন কী শাবনূরের চেহারায়ও পরিবর্তন এসেছে। তাই আগের শূটিং এর অংশের সঙ্গে বর্তমানের কাজের অংশ মিলবে না। এই ছবি গুলো মুক্তি পাওয়ার পর তার ফলাফল কী হবে সেটা নিয়ে প্রযোজকরা বেশ সংশয়ে আছেন।  এদিকে পূর্নিমার হাতে একটি মাত্র ছবি রয়েছে যেটি মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালনা করছেন। শাবনূরের মতো পুর্ণিমারও সন্তান হওয়ার কারনে ছবির কাজ থেকে বিরত থাকতে হয়েছে অনেক দিন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন বলে বার বার ঘোষনা দেওয়ার পর তিনি চলচ্চিত্রে ফিরে আসতে পারেননি। এতে প্রযোজকরা আশ্বস্থ হতে পারছেনা কারন এর আগেও শাবনূর অষ্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে কথা দিয়েছিলেন খুব তারাতাড়ি ক্যামেরার সামনে দাড়াবেন কিন্তু কথা রাখতে পারেননি। কিন্তু চলচ্চিত্রে ফিরে আসার ঘোষনা দেওয়ার পর অনেক নির্মাতা পূর্ণিমাকে নিয়ে ছবি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে পূর্ণিমা তেমন সাড়া দিচ্ছেন না। তবে মডেলিং করার ব্যাপারে তার প্রচুর আগ্রহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন।  শাবনূর ও পূর্ণিমা দু’জনই নি:সন্দেহে চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল  ছবির তারকা। এখন চলচ্চিত্রের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। এই সুসময়ে যদি তারা আগের মতো নিয়মিত ভাবে কাজ করেন তবে চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা আরো ভালো হবে বলে সবার বিশ্বাস। শাবনূর ও পূর্ণিমার চলচ্চিত্রে ফিরে আসার ব্যাপারে কথা বলেন প্রযোজক সমিতির সমন্বয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম খোরশেদ।  ২০ ছবির এই প্রযোজক বলেন, একটা সময় শাবনূর ও পূর্ণিমার চলচ্চিত্রে ফিরে আসা খুবই দরকার ছিল। গত ২/৩ বছর ছবির যখন চরম মন্দা যাচ্ছিল তখন নির্মাতারা বাজার কাটতি এই দুই নায়িকার অভাব বোধ করেছেন দারুন ভাবে। ওই সময় যদি তারা দু’জন নিয়মিত ছবি করতেন তা হলে হয়তো চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা এতটা খারাপ হতো না। এখন নির্মাতারা নতুনদের অনেক কষ্ট করে গড়ে নিয়েছেন। তাদের নিয়ে ছবি করে সাফল্যও পাচ্ছেন। এসময়ে যদি শাবনূর ও পূর্ণিমা তাদের হাতের ছবি গুলো শেষ করেন তাহলে প্রযোজকরা খুবই উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে এই দুই তারকা যদি আবার নিয়মিত ভাবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তবে চলচ্চিত্রের রমরমা অবস্থা হয়তো আবার ফিরে আসবে।