Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এই শীতে যত্ন নিন সোনামনিদের

অধিকাংশ শিশুরই জন্মের পর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এর মধ্যে ত্বকের সমস্যা অন্যতম।  শিশুদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়।  যেমন ত্বকে ফুসকরি ওঠা, চুলকানি, ত্বকের লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।  ত্বকের সমস্যা শিশুকে কষ্ট দিতে পারে।  তাই প্রয়োজন শিশুর ত্বকের তাড়াতাড়ি যত্ন নেয়া।  তবে চিন্তার কারণ নেই।  আপনাকে ডাক্তারের কাছেও যেতে হবে না।  কারণ সামান্য সচেতনতা ও সঠিক যত্ন আপনার শিশুকে রাখতে পারে সুস্হ।  জেনে নিন শিশুর ত্বকের সমস্যা এর সমাধান।  রুক্ষ আবহাওয়ার জন্য শিশুদের ত্বক অনেক সময় অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়।  এসময় শিশুর ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।  এর সঙ্গে এগজিমার মতো সমস্যাও হতে পারে।  বারবার হাঁচি হতে পারে, একে বলা হয় অ্যালার্জিক রাইনাইটিস।  অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিবারে কারো যদি এগজিমা বা অ্যাজমা থাকে, তাহলে তা বাড়ির শিশুদের মধ্যে বংশগতভাবে ছড়িয়ে পড়ে।  এসব সমস্যা সাধারণত শীতকালে বেশি হয়।

করণীয়: শিশুকে নিয়মিত খাটি নারকেল তেল বা ভাল মানের অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করুন।

ময়েশ্চারাইজার ও ব্যবহার করতে পারেন।  প্রতিদিন শিশুকে হালকা গরম পানিতে গোসল করান।  খেয়াল রাখবেন পানির তাপমাত্রা যেন ৩৭ ডিগ্রির বেশি না হয়।  অবশ্যই দ্রুত গোসল করানোর চেষ্টা করুন, পাঁচ মিনিটের বেশি গোসল করাবেন না।  এতে ত্বকের কর্নিয়াল লেয়ার ফুলে গিয়ে প্রদাহ হতে পারে।  শিশুর সারা গায়ে যদি প্রচণ্ড চুলকানি হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

শিশুর নরম কোমল ত্বকের যত্ন

একটু একটু হিমেল আবহাওয়া বড়দের জন্য বেশ উপভোগ্য, কিন্তু বাড়ির ছোট্ট সদস্যকে কিন্তু তা বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়।  শিশুদের ত্বক বড়দের ত্বকের চেয়ে একদমই আলাদা।  পাল্টে যাওয়া আবহাওয়ায় শিশুর মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হয়।  তাই বাড়ির অন্য সদস্যদের সচেতন হতে হবে শিশুর যত্নআত্তিতে।

এই আবহাওয়ায় শিশুর ত্বকের যত্নে করণীয়: শীতে শিশুর শরীরে যাতে প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি না হয়, সে জন্য বারবার পানি খাওয়াতে হবে শিশুকে।  এতে শিশুর ত্বক ভালো থাকবে।  শিশু যে ঘরে থাকে, সেই ঘরের তাপ ধরে রাখতে দিনের বেলায় দরজা-জানালা খুলে দিয়ে রোদ আসতে দিন।  রাতে শিশুকে প্রয়োজনমতো শীতবস্ত্র পরাতে হবে।  এতে শিশুর ত্বক জলীয় বাষ্প হারাবে কম এবং ত্বক সুস্হ থাকবে।  শিশুর ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে নারকেল তেল ব্যবহার করা ভালো।  নরম হাতে তেল দিয়ে মালিশ করিয়ে দিতে পারেন শিশুকে।  যেদিন বেশি কুয়াশা থাকবে, সেদিন শিশুর গোসলের সময় কমিয়ে দিন।  হালকা উষ্ণ পানিতে শিশুকে দ্রুত গোসল করিয়ে ফেলুন।  গোসল শেষে নরম তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে দিন।  ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার আগেই চটজলদি ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন।  শিশুকে সকালের নরম রোদে খেলতে সুযোগ দিন।  সকালের রোদ শিশুর ত্বকে ভিটামিন ডি-এর জোগান দেবে।  এই সময় বাজার ভরে উঠছে শীতকালীন ফলে, শিশুকে নিয়ম করে কমলা খাওয়ান।  কমলার রস শিশুর ত্বকের জন্য খুব উপকারি।  শিশুর সুষম খাদ্য নিশ্চিত করুন।  চেষ্টা করুন প্রতিবেলা খাবারে শাকসবজি রাখতে।  শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃণ রাখা যায়।

শীতে শিশুর প্রসাধনী

অন্য মৌসুমের চেয়ে শীত ঋতু অনেকটাই আলাদা।  তাই এই ঋতুতে নিতে হয় একটু বাড়তি প্রস্তুতি।  মাথার চুল থেকে পা এর নখ পর্যন্ত সব কিছুর প্রতি বাড়তি মনোযোগী হতে হয়।  আর তার সাথে বাড়তি যত্ন নিতে হয় শিশুদেরও।  শীতে প্রকৃতিতে যে পরিবর্তন আসে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিশুদের একটু কষ্ট হয়।  তাই শিশুর প্রতি বাবা-মায়ের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।  শীত বুঝে পাতলা বা মোটা কাপড় পরাতে হবে।  শিশুদের ত্বক সাধারণত সংবেদনশীল ও নরম।  তাই শীতে শিশুদের ত্বক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়।  শীতে শিশুর কোমল ত্বকের যত্ন নিতে অবশ্যই ভালো মানের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।  শীতে শিশুর ত্বকের যত্নে সতর্কতার সাথে প্রসাধন ব্যবহার করা উচিত।  দু’একদিন পরপর শিশুকে ভালো মানের শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে দিন।  এতে ত্বক সুরক্ষা করবে এবং খুশকি ও ফুসকুড়ি থেকে রক্ষা পাবে শিশু।  জৈব ফুলের নির্যাস, ক্যমোমিল, জৈব পুস্প বিশেষ, শিয়া মাখন, সানফ্লাওয়ার তেল ও ঘৃত কুমারী দিয়ে ম্যাসেজ করলে শিশুর ত্বক শক্তিশালী হয়।  শীতকালে শিশুর ত্বক ম্যাসেজ করা অত্যন্ত জরুরি।  কারণ ম্যাসেজ করার আধা ঘণ্টা পর যদি শিশুকে গোসল করানো হয় তাহলে ঠান্ডাও কম লাগে।  বিভিন্ন চর্মরোগ প্রতিরোধ ও ত্বকের শুষ্কতা, রুক্ষতাকে বিদায় করে শিশুর কোমল ত্বককে আরো মসৃণ ও নরম করে তোলে এবং শিশুর ত্বক উজ্জ্বল করে।

শিশুদের গোসল করার সময়টা তাদের কাছে খুব আনন্দের সময়।  প্রত্যেক শিশু পানির সংস্পর্শে এসে পানি দিয়ে খেলা ও গোসল দুটোই সমানভাবে উপভোগ করতে চায় তাই গোসলের সময় বাথরুমে শিশু যেন বেশিক্ষণ বা ভিজে সেদিকে খেয়াল রাখুন।  চুলে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহারে শিশুর চোখ জ্বালা করবেনা।  বেবি শ্যাম্পু কম ক্ষার যুক্ত যার জন্য শিশুর মাথার ত্বক আলতো করে পরিষ্কার করে এবং চুলকে নরম, সুস্হ ও সিল্কি করে।

আমরা অনেকেই শিশুর মুখে বডি লোশন দিয়ে থাকি কিন্তু এটা কখনই ঠিক না।  মুখে ব্যবহার করতে হবে ক্রিম শুধু মাত্র ক্রিমই শিশুদের মুখের কথা চিন্তা করে তৈরি করা হয়ে থাকে।  অনেক সময় দেখা যায় শীতকালে শিশুদের গাল ফেঁটে যায়।  শিশুর মুখের ত্বক এতটাই কোমল যে শীতের রুক্ষতাকে সহ্য করতে না পেরে খুব তাড়াতাড়ি ত্বক ফেঁটে যায়।  তাই শিশুর মুখের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে ব্যবহার করুন ভালো মানের ক্রিম।  তবে বডি লোশন শীতকালে শুধুমাত্র শরীরের ত্বকের রুক্ষতাকে রক্ষাকরে এবং শিশুর ত্বক লাবণ্যময় ও মসৃন করে তোলে।  শীতে শিশুর বডি লোশন ব্যবহার বড়দের মতই গুরুত্বপূর্ণ।  বডি লোশন শিশুর ত্বককে আরো কোমল, নরম ও দীপ্তিময় করে তোলে।