Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা অনেক ভালো

গান নিয়ে দারুন ব্যসৱ সময় পার করছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা কুমার বিশ্বজিৎ। সঙ্গীতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার পরও একই গতিতে গান করে চলেছেন এ চিরসবুজ শিল্পী। গেল ঈদে একাধিক নতুন গান ও অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে কুমার বিশ্বজিতের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তার প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম সারাংশে তুমি। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যসৱতা এবং সঙ্গীতের নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন আনন্দ আলোর সঙ্গে।

আনন্দ আলো: গেল ঈদে আপনার দ্বৈত গানের সারাংশে তুমি মিউজিক্যাল ফিল্মটি প্রকাশিত হয়েছে। কেমন সারা পাচ্ছেন?

কুমার বিশ্বজিৎঃ প্রথম দিকে চিনৱা ছিল কেবল দ্বৈত অ্যালাবাম। পরে এটিকে চলচ্চিত্রে রুপ দেয়ার চিনৱা করা হয়। চিনৱা অনুযায়ী পরিকল্পনা মাফিক চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। গানগুলো আগেই শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। একুশে টিভিতে ঈদের প্রথম দিন এটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। যেহেতু এটি বাংলাদেশের প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম তাই এটি একটি ইতিহাস।

আনন্দ আলো: এছাড়াও বেশ কিছু অ্যালবামে আপনার নতুন গান প্রকাশ হয়েছে। এ সম্পর্কে বলুন?

কুমার বিশ্বজিৎ: আমার আর জয় শাহরিয়ারের একটি দ্বৈত অ্যালবাম প্রকাশ করেছে আজব রেকর্ডস। অ্যালবামের নাম স্বপ্ন সমুদ্দুর। এখানে জয়ের সুর ও সঙ্গীতে গান গেয়েছি আমি। এর বাইরে কয়েকটি মিশ্র অ্যালবামেও গেয়েছি। এবারের ঈদে সজীব দাশ, ইমরান, মিলন, সুমন কল্যাণ, জয় শাহরিয়ারের সুরে গান করেছি। সবাই আমার গান করতে গিয়ে নিজেদের সেরাটাই দিয়েছে এ কারণে গানগুলো ভালো হয়েছে। ঈদে আরো অনেক গানের প্রসৱাব ছিল সেগুলো সময়ের অভাবে করতে পারিনি।

আনন্দ আলো: নতুন একক অ্যালবামের কাজ করছেন কী?

কুমার বিশ্বজিৎ: আমার একক অ্যালবামের কাজ চলছে। তবে সিঙ্গেলসের ওপর জোর দিচ্ছি বেশি। ৬টি গান রেডি হয়েছে। এর মধ্যে একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত করেছি আমি চিনিগো চিনি তোমায়।

আনন্দ আলো: অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে?

কুমার বিশ্বজিৎ: অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এখন ভালোর দিকে। ইন্ডাস্ট্রি হতাশা কাটিয়ে উঠেছে। এখন অনলাইনে গান প্রকাশ হচ্ছে। গানের নতুন নতুন মাধ্যম তৈরি হচ্ছে। সেগুলো থেকে ভালো আয় করছে শিল্পীরা। সিডি বিক্রি করলেও অন্যান্য মাধ্যম থেকে আয়টা বেড়েছে। মোটকথা সঙ্গীত শিল্পীদের জন্য নতুন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এটা অবশ্যই সুখবর। এখনতো গান নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। সেদিক থেকেও অডিওর অবস্থা ভালো।

আনন্দ আলো: সঙ্গীতে এ প্রজন্মের তরুণরা কেমন করছে?

কুমার বিশ্বজিৎ: তরুণরা অনেক ভালো করছে। তাদের মধ্যে মেধা আছে। কাজ করার ইচ্ছে আছে। তবে নতুনদের দীর্ঘস্থায়ী হতে হবে। সাময়িক জনপ্রিয়তার জন্য গান করা উচিত নয়। বাণিজ্যিক বিষয়টি তো থাকবেই। তার পাশাপাশি এমন কিছু সৃষ্টি করতে হবে যেটা মানুষ আজীবন মনে রাখবে।

মিউজিক ভিডিও নিয়ে ফেরদৌস ওয়াহিদ

জনপ্রিয় পপ সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ সম্প্রতি দুটি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন। গানের ভিডিও দুটি হচ্ছে মানুষ যাকে বলে ও আমায় ফিরিয়ে দিয়েছো। এ গান দুটি তার ২৩তম একক অ্যালবাম রোদের বুকে থেকে নেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সম্প্রতি আমার ২৩তম একক অ্যালবামের কাজ সম্পন্ন করেছি। এতে আমার কিছু পছন্দের গান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যালবামের দুটি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করেছি। কারণ মিউজিক ভিডিও ছাড়া গান এখন শ্রোতাদের কাছে পৌছানো যায় না। ফেরদৌস ওয়াহিদ তার ২৩তম একক অ্যালবামটি একাধিক গীতিকারের ৬টি গান দিয়ে সাজিয়েছেন। এতে গান লিখেছেন কবির বকুল, রবিউল ইসলাম জীবন ও ড. রাতিন প্রমুখ। অ্যালবামটি প্রকাশ করবে নতুন অডিও প্রতিষ্ঠান এমএ মিউজিক।

অনেকদিন পর ডলি সায়নৱনী

সাত বছর পর নতুন একক অ্যালবাম নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হচ্ছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়নৱনী। অ্যালবামের নাম একলা ছবি। খুব শিগগিরই অ্যালবামটি সিডি আকারে প্রকাশ হবে। ডলি সায়নৱনীর সর্বশেষ একক অ্যালবামের নাম ছিল বনমালি। এরপর তিনি স্টেজশো, মিক্সড অ্যালবাম আর চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেয়ায় ব্যসৱ ছিলেন। নতুন অ্যালবামটি নিয়ে ডলি বলেন, দুই বছর সময় নিয়ে গানগুলো তৈরি করেছি। আমার পুরো সঙ্গীত জীবনে লোক আঙ্গিকের গান সবচেয়ে বেশি গাওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার আমি আধুনিক গানই বেশি করেছি। একলা ছবি অ্যালবামের গানগুলো সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন নাজির মাহমুদ, মুশফিক লিটু, মাহমুদ জুয়েল, জে কে মজলিশ, রকেট মন্ডল ও অভি আকাশ। প্রয়াত প্রণব ঘোষের সুরের একটি গান থাকছে এই অ্যালবামে। নতুন এই অ্যালবাম প্রযোজনায় আছে সাউন্ডটেক। সিডির পাশাপাশি গানগুলো সাউন্ডটেকের ইউটিউব চ্যানেল থেকেও শোনা যাবে। ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় ডলি সায়নৱনীর প্রথম অ্যালবাম হে যুবক। এরপর তার আরও ১৬টি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

গানের পালকি

চ্যানেল আই ও শরীফ মেলামাইনের যৌথ উদ্যোগে একুশে পদকপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে নিয়ে পালকী নামে একটি ভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। অনুষ্ঠানটি নির্দেশনা দিচ্ছেন জামাল রেজা । গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা হাজার হাজার গান নিয়ে ধারাবাহিক গানের অনুষ্ঠান ‘পালকি’ তে যথাযথ সুরে ও কথায় এই সময়ের শিল্পীরা গাইবেন। গান রেকর্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে। পরিচালক জামাল রেজা জানান এরই মধ্যে গান গেয়েছেন রিজিয়া পারভীন, পলাশ, মনির খান, দিঠি আনোয়ার, অপু। এছাড়াও অনুষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে গাইবেন ক্লোজআপ ওয়ান ও সেরা কণ্ঠের গায়িকা সহ অন্যান্য শিল্পীরা। ১৯ জুলাই থেকে ‘পালকি’ অনুষ্ঠানটি প্রচার শুরু হয়েছে চ্যানেল আইতে। গান রেকর্ডিংয়ের সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ার নিজে উপস্থিত থাকছেন যাতে গানের কথায় বা সুরে কোনো রকম ভুল না হয়। ‘পালকি’ অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, আমাদের দেশে রয়েছে সুন্দর সুন্দর হাজার হাজার বাংলা গান। এই সব গানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকেই বর্তমানে বেঁচে নেই, অনেকেই হয়তো আগামীতে থাকবেন না। তাদেরকে বাচিয়ে রাখার মতো তেমন কোনো আর্কাইভ নেই। কিন্তু চ্যানেল আই ও শরীফ মেলামাইন এই গান গুলোকে বাচিয়ে রাখার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পালকি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। যদিও কাজটি কঠিন তারপরও তারা যে সাহস করে এগিয়ে যাচ্ছেন এজন্য তাদের প্রতি আমি আনৱরিকভাবে কৃতজ্ঞ। গানের মানুষ আসবেন আবার চলেও যাবেন। কিন্তু তাদের কীর্তি পৌছে দিতে হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে। এই কাজটি করাটাও মহৎ একটি উদ্যোগ যা চ্যানেল আই ও শরীফ মেলামাইন করছে। মনে রাখতে হবে কোনো কিছুই হারাবার নয়। কিন্তু মনে রাখার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যেতে হবে। যা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

মাটির গান

সম্প্রতি লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে কণ্ঠশিল্পী সানিয়া রমার ডিভিডি অ্যালবাম মাটির গান। অ্যালবামটির মোড়ক উন্মোচন করেন দেশবরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী, গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী, সঙ্গীতজ্ঞ সঞ্জীব দে, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী, সারগাম সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন, উপস্থাপক ও নির্মাতা আনজাম মাসুদসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন লেজার ভিশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আরিফুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, সঙ্গীত জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাংবাদিকেরা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন কণ্ঠশিল্পী সাজেদ ফাতেমী। মাটির গান সানিয়া রমার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম। অ্যালবামটিতে সাতটি গান রয়েছে। গানের কথা ও সুর করেছেন রাধারমন দত্ত, আব্দুর রহমান বয়াতি, বিজো ভূষণ, সোহেল রাজ ও শিল্পী নিজে। গানগুলো হলো- হৃদ মাঝারে, যাবো মদিনা, জাতের বিচার নাই ইত্যাদি। অ্যালবামটি প্রসঙ্গে সানিয়া রমা বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার দ্বিতীয় অ্যালবামটি অনেক যত্নসহকারে কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি শ্রোতা দর্শকদের ভালো কিছু গান উপহার দেয়ার। আশাকরি গানগুলো শ্রোতাদের ভালো লাগবে।

দ্য লিজেন্ড সৈয়দ আব্দুল হাদী

syed-abdul-hadiসূর্যোদয়ে তুমি, এমনওতো প্রেম হয়, যেও না সাথি, যে মাটির বুকে, চলে যায় যদি কেউ, চক্ষের নজর এমনি কইরা এমন অনেক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। তার ৪৫টি গান নিয়ে এবার তৈরি হয়েছে অ্যালবাম। নাম দ্য লিজেন্ড সৈয়দ আব্দুল হাদী। শিগগিরই বাংলাঢোলের ব্যানারে চারটি সিডিতে অ্যালবামটি প্রকাশ পাবে। দ্য লিজেন্ড সৈয়দ আব্দুল হাদী সংকলনের অধিকাংশ গানে নতুন করে কণ্ঠ দিয়েছেন বরেণ্য এই শিল্পী। কিছু গানের ক্ষেত্রে সঙ্গীতায়োজন অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। কিছু গানের নতুন করে সঙ্গীতায়োজন করেছেন কলকাতার রকেট মন্ডল। সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে গান গাইছি। এই দীর্ঘ সময়ে কতগুলো গানে কণ্ঠ দিয়েছি নিজেও জানি না। ষাট, সত্তর ও আশির দশকে বেতার ও টেলিভিশনে গাওয়া অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান হারিয়ে গেছে সংরক্ষনের অভাবে। এমনই কিছু গান নিয়ে অ্যালবামটি করেছি। এতে চলচ্চিত্রের কয়েকটি গানও রয়েছে। যেগুলো কোনো অ্যালবামে বন্দি করা হয়নি। তিনি আরও জানান, নতুন প্রজন্মের শ্রোতাদের কথা মাথায় রেখেই এ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।