Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

খুশির মধ্যেই তো আছি রে ভাই!

বৃন্দাবন দাস জনপ্রিয় একজন নাট্যকার ও অভিনেতা। এ যাবৎ তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক লিখেছেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটক গুলো মধ্যে রয়েছেÑ বন্ধুবরেষু, ঘর-কুটুম, আলতা সুন্দরী, জামাই মেলা, হাড়কিপটে, মোহর শেখ, সাকিন সারি সুরি, চৈতা পাগল, পাত্রী চাই, পত্র মিতালী, সার্ভিস হোল্ডার ইত্যাদি। তিনি প্রথমে আরণ্যক এবং পরে প্রাচ্যনাট্যের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। মঞ্চে জয়-জয়ন্তী, আগুন মুখা, ঘুমের মানুষ, সার্কাস সার্কাস সহ অনেক সফল মঞ্চায়নের সঙ্গে যুক্ত। অনেক সময় টেলিভিশনে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। লেখালেখির পাশাপাশি এখনও অভিনয় করছে। এবার আনন্দ আলোর টি-টোয়েন্টি বিভাগে মুখোমুখি হয়েছে তিনি। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক

আনন্দ আলো: আপনি কী বৃন্দাবন?

বৃন্দাবন দাস: মনে তো হচ্ছে আমিই বৃন্দাবন।

আনন্দ আলো: বৃন্দাবন নামের অর্থ কী?

বৃন্দাবন দাস: বৃন্দাবন নামের কোনো অর্থ নাই। বৃন্দাবন হচ্ছে একটা জায়গার নাম।

আনন্দ আলো: আপনি কখনো কী সেই বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন?

বৃন্দাবন দাস: বৃন্দাবনের ভিতরেই তো আছি।

আনন্দ আলো: এত কাজ থাকতে নাটক লেখালেখির কাজে এলেন কেন?

বৃন্দাবন দাস: লেখালেখির কাজে যে কেন এসেছি আমি নিজেও জানি না।

আনন্দ আলো: জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয় যে কাজ অর্থাৎ নাটকটি…

বৃন্দাবন দাস: আমার প্রথম লেখা ‘বন্ধুবরেষু’ নাটকটি আমার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়।

আনন্দ আলো: আপনার লেখা নাটকের কোন সংলাপটি হৃদয়ে গেথে আছে?

বৃন্দাবন দাস: আমার লেখা নাটকের বহু সংলাপই হৃদয়ে গেঁথে আছে। তবে মঞ্চে ‘কাঁদতে মানা’ নাটকের ‘আইন যারা তৈরি করে আইন কী কখনো তাদের স্পর্শ করেছে’ এই সংলাপটি মাঝে মাঝে হৃদয়ে নাড়া দেয়।

আনন্দ আলো: দেশের টিভি দেখেন?

বৃন্দাবন দাস: দেখব না কেন? আমাদের এতগুলো টিভি চ্যানেল। অবশ্যই দেশের টিভি চ্যানেল দেখি। আমাদের নাটকগুলো দেখি। ভালো কিছু হলে ভালো লাগে। আর খারাপ কিছু হলে দুঃখ লাগে।

আনন্দ আলো: আপনার লেখা বেশির ভাগ নাটক কমেডি ধাঁচের হয় কেন?

বৃন্দাবন দাস: আমার লেখা নাটকগুলো কমেডি না। আমি কমেডি নাটক লিখি না। আমার নাটকে মানুষের অসংঘতিগুলোকে একটু বিদ্রƒপভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করি। সেই কারণে হয়তো হাস্যরসাত্মক মনে হয়।

আনন্দ আলো: হঠাৎ আপনার লেখা নাটকের শুটিং দেখতে বিদেশ থেকে মি. বিন এলেন। তাকে দেখে কি করবেন?

বৃন্দাবন দাস: তাকে দেখে বলব, তুমি হাড়কিপটে আমার লেখা নাটকের শুটিং দেখতে আইছো। খুউব ভালো করছো। এহন বইস্যা এক কাপ চা খাও আর শুটিং দেখ। তোমাগো দেশে শুটিংএ কি করো না করো…। আমাগো শুটিং কত যে কষ্টের এইডা বইস্যা বইস্যা দেখ বেটা।

আনন্দ আলো: মিডিয়ায় যে ব্যাপারটা ভালো লাগে না?

বৃন্দাবন দাস: এখন অনেক কিছুই ভালো লাগে না। বিশেষ করে হিপোক্রেসি।

আনন্দ আলো: হাসি না এলেও হাসতে হয় কখন?

Brindabon-Das-1বৃন্দাবন দাস: বোকাদের সঙ্গে আড্ডায় বসলে।

আনন্দ আলো: রেগে যান যখন…

বৃন্দাবন দাস: নাটক লেখালেখির সময় কেউ বিরক্ত করলে।

আনন্দ আলো: যে প্রশ্ন শুনতে শুনতে ক্লান্ত…

বৃন্দাবন দাস: আপনার লেখা নাটকগুলো এত হাসির হয় কেন?

আনন্দ আলো: যে নাটক দেখে কেঁদেছি…

বৃন্দাবন দাস: সার্ভিস হোল্ডার নাটকটি যতবার দেখেছি ততবার কেঁদেছি।

আনন্দ আলো: আপনার স্ত্রী জনপ্রিয় অভিনেতা শাহনাজ খুশি। খুশিকে পেয়ে আপনি কতটা খুশি?

বৃন্দাবন দাস: খুশির মধ্যেই তো আছি।

আনন্দ আলো: সংসারে কে বেশি সেক্রিফাইস করে আপনার স্ত্রী নাকি আপনি?

বৃন্দাবন দাস: অবশ্যই স্ত্রী। সেই বেশি সেক্রিফাইস করে।

আনন্দ আলো: দুজনের মধ্যে মান অভিমান হলে কে আগে রাগ ভাঙান?

বৃন্দাবন দাস: আমাদের মধ্যে মান অভিমান হলে আমি আগে থেকেই সারেন্ডার করি। কারণ আমার জন্যই ঝামেলাটা বাজে সব সময়।

আনন্দ আলো: গোপন কোন কথাটি স্ত্রীর কাছেও বলেন না?

বৃন্দাবন দাস: আমার কোনো গোপন কথা নেই। সব কথাই তো বলা হয়ে গেছে। শুধু স্ত্রীর কাছে না, দর্শকের কাছেও বলা হয়ে যায় বিভিন্ন চরিত্রের মুখ দিয়ে।

আনন্দ আলো: শোনা কথা আপনি নাকি স্ত্রীকে ভয় পান?

বৃন্দাবন দাস: সব ভদ্রলোকই স্ত্রীকে ভয় পান। যে স্ত্রীকে ভয় পায় না তার ভেতরে ঝামেলা আছে।

আনন্দ আলো: মঞ্চই হচ্ছে একজন পেশাদার অভিনেতার আসল ক্ষেত্র। কথাটা কতটা সত্যি?

বৃন্দাবন দাস: একজন দক্ষ অভিনেতা হতে প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা। মঞ্চই একজন পেশাদার অভিনেতার আসল ক্ষেত্র। আমি মঞ্চের মানুষ, আমি বলবো কেউ মঞ্চে সঠিক দিক নির্দেশনায় অভিনয় করলে শতভাগ অভিনেতা তাকে মঞ্চই বানিয়ে দেয়।