Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সিনেমা

২৪ জুলাই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান

২৪ জুলাই প্রদান করা হবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে গুণী শিল্পীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৫টি বিভাগে প্রতিবছর সরকারি উদ্যোগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এবছর আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা ও কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমান। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন যুগ্মভাবে শাকিব খান (আরো ভালোবাসবো তোমায়) ও মাহফুজ আহমেদ (জিরো ডিগ্রি), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পাচ্ছেন জয়া আহসান (জিরো ডিগ্রি)। এবার অধিক সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছে রিয়াজুল বিজু পরিচালিত ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’ ছবিটি।

বিনা কর্তনে গহীন বালুচরের মুক্তি!

সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘গহীন বালুচর’। একটি চরে গড়ে ওঠা দুই পরিবারের জীবন ঘনিষ্ঠ গল্প গুরুত্ব পেয়েছে ছবিটিতে। সরকারি অনুদানে নির্মিত এ ছবিতে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আফরোজা বানু, ফজলুর রহমান বাবু, জিতু আহসান, শাহাদাৎ হোসেন, বন্যা মির্জা, রুনা খান, তানভীর মুন, নীলাসহ অনেকে। বিনা কর্তনে ছবিটিকে ছাড়পত্র দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। চলচ্চিত্রটি সহপ্রযোজনা করেছে সাতকাহন ও ফ্রেন্ডস মুভিজ। খুব শিগগিরই ছবিটি সারাদেশে মুক্তি পাবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক বদরুল আনাম সৌদ।

ওপারের ছবি সেরা অভিনেত্রী জয়া আহসান

ওপার বাংলার ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছেন নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘বিসর্জন’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য দারুণ প্রশংসা পেয়েছেন। ছবিটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়। এবার ছবিটির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন জয়া। সানফ্রানসিসকোতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল বাংলা ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড-এ সম্মানীত হয়েছেন। সেরা পরিচালকের স্বীকৃতি পেয়েছেন কৌশিক গাঙ্গুলী।

মাশরুরের দ্বিতীয় ছবি রাইয়ান

Orshaগুণী বাবার গুণী সন্তান মাশরুর পারভেজ। বাবা নন্দিত অভিনেতা সোহেল রানার অনুপ্রেরণায় ছবি নির্মাণে এগিয়ে আসে মাশরুর পারভেজ। প্রথম ছবির নাম ছিল ‘অদৃশ্য শত্রæ’। ছবিটি বেশ আলোচিত হয় বিশিষ্টজনের কাছে। তবে প্রথম ছবি নিয়ে নিজের অনেক অতৃপ্তির কথা জানালো মাশরুর। তার মন্তব্য প্রথম ছবিতে বাবা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তবে দ্বিতীয় ছবিতে সেইভাবে বাবার সহযোগিতা নেইনি। কারণ আমি নিজের মতো করে নিজস্ব ভাবনায় ছবি বানিয়েছি এবার। আশাকরি দর্শক এবার আরো বেশি খুশি হবেন। মাশরুর পারভেজের নতুন ছবির নাম ‘রাইয়ান’। গল্প সংক্ষেপ অনেকটা এরকমÑ একজন পরিশ্রমী লেখক একদিন স্বনামধন্য একজন চিত্র পরিচালকের মুখোমুখি হন। কিন্তু তিনি যেভাবে ভেবেছিলেন সাক্ষাৎকার পর্বটা ঠিক সেভাবে ঘটে না। একই দিনে ঘটনাচক্রে এক রহস্যময়ী তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপরই গল্পের ডালপালা বিস্তৃত হতে থাকে। লেখকের ব্যক্তি জীবনের নানা সমস্যা এবং রহস্যময়ী নারীর জীবনসংগ্রাম নিয়ে বিস্তৃত হতে থাকে রাইয়ান ছবির গল্প। ছবিটি অচিরেই দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হবে বলে পরিচালক সূত্রে জানা গেছে।

আপাতত যৌথ প্রযোজনায় ছবি নয়!

অনেক আলোচনা ও সমালোচনার পর অবশেষে স্থগিত হলো যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ। কার্য্যক্রম, নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত দেশে যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশের চলচ্চিত্র পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্রের সুষ্ঠু বিকাশ ও উন্নয়নের স্বার্থে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তথ্য সচিব মরতুজা আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র পরিবারের প্রতিনিধিদের পক্ষে অভিনেতা ফারুক, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন। একইসঙ্গে সভায় যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ নীতিমালা দ্রæত যুগোপযোগী ও পূর্ণাঙ্গ করে নতুন নীতিমালা তৈরিরও সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভায় বলা হয়, নতুন নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্পর্কিত কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া দেশে নির্মিত চলচ্চিত্রের জন্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) তত্ত¡াবধানে ৫০টি এইচডি প্রজেক্টর মেশিন কিনে সিনেমা হলগুলোর প্রজেকশন কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এ বৈঠকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মনজুরুর রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, যুগ্ম সচিব মো. ইউছুব আলী মোল্লা, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, উপসচিব শাহীন আরা বেগম, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, খোরশেদ আলম খসরু, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারন সম্পাদক বদিউল আলম খোকন, অভিনেতা রিয়াজ ও জায়েদ খান উপস্থিত ছিলেন।

এই ঘোষণার পর চলচ্চিত্র অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। এরমধ্যে যৌথ প্রযোজনার বিপক্ষে অন্যতম আন্দোলনকারী ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলতে চাই না। যৌথ প্রযোজনায় আমরা চেয়েছি দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন হবে। আশা করি নতুন কমিটির মাধ্যমে পূর্ণ নীতিমালায় তা উঠে আসবে। নতুন কমিটির আহŸায়ক হারুনুর রশীদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। তিনি একসময়ে বিএফডিসির মহাপরিচালক ছিলেন। ভালো একজন শিল্পীও। আর ইতোমধ্যে যৌথ প্রযোজনার প্রিভিউ কমিটি বিলুপ্ত। নতুন কমিটি ভালো কিছু করবেন আশা করি।’ প্রায় একই ধরনের অনুভূতি জানিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের চলচ্চিত্রপ্রেমীর আন্দোলনের ফসল। আমরা সাধুবাদ জানাই।’ এদিকে যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন ওমর সানী। তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে এমন সংবাদ শুনে। আমি চাই, চলচ্চিত্রের ভালো হোক। নব্বই দশকে আমি চলচ্চিত্র যেমন দেখেছি, মৃত্যুর সময়ও তেমন সুসময় দেখতে চাই। নতুন এ সিদ্ধান্তকে আমার পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই। সামনে ভালো কিছু হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

সা¤প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার পক্ষ থেকে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিমুল্লাহ খোকন। তিনি বলেন, ‘সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমাদের কিছু ছবির কাজ চলছে। সেগুলো শেষ হবে। তবে নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনও ছবির কাজ শুরু হবে না।’

এই প্রসঙ্গে পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থে দেশীয় চলচ্চিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা তার প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য অনেকটাই সফল হয়েছে। যদি যৌথ প্রযোজনায় ছবি তৈরির নীতিমালা যথাযথ ভাবে সংশোধন করা সম্ভব হয়, তাহলে যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা বন্ধ হবে।’ প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘আমরা এখন চূড়ান্ত সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করছি। সামনে আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের জন্য ভালো কিছু হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

উল্লেখ্য, এবার ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত দুটি ছবি ‘নবাব’ ও ‘বস টু’ মুক্তি পায়। এই দুটি ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছবি দুটিতে যৌথ প্রযোজনায় সিনেমা তৈরির নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি।