Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সাইফুর রশীদের স্হাপত্য ভূবন

আধুনিক স্হাপত্য শিল্পে যারা দেশের জন্য কাজ করে চলেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম স্হপতি রেজা মোহাম্মদ সাইফুর রশীদ।  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্হাপত্য বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছেন।  ২০০৬ সালে নিজে গড়ে তোলেন ‘আর ডিসিএল’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম।  এ যাবৎ তিনি বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন স্হাপনার ডিজাইন করেছেন।  সাইফুর রশীদ একজন সঙ্গীত শিল্পীও।  খুলনা বেতারে গান করেছেন।  তার একটি অ্যালবামও বের হয়েছে।  এবার শাহসিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন।  লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক।

ছয় ভাই বোনের মধ্যে স্হপতি রেজা মোহাম্মদ সাইফুর রশীদ সেজো।  তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে।  ছোটবেলা থেকেই ছবি অাঁকা ও গান-বাজনার প্রতি ছিল তার প্রচ  নেশা।  বিভাগীয় পর্যায়ে সঙ্গীতে ও ছবি অাঁকা প্রতিযোগিতায় অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।  খুলনা রেডিওতে গান করেছেন।  গানের একটি মিক্সড অ্যালবামও বের হয়েছিল তার।  গান শেখা, ছবি অাঁকা ছিল সাইফুরের পছন্দের বিষয়।  তবে ছবি অাঁকা অাঁকির ঝোকটা ছিল অনেক বেশি।  ছবি অাঁকতে অাঁকতে আজকে তিনি একজন সফল আর্কিটেক্ট।

ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন ১৯৮৮ সালে।  ১৯৯০ সালে একই কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্হাপত্য বিভাগে।  তার প্রিয় বন্ধুদের তালিকায় রয়েছেন সেলিম, স্বাধীন, নাসের, জামান, লোকমান ও মুশফিক।  এরা কেউ আর্কিটেক্ট নন।  প্রিয় শিক্ষকদের মধ্যে আছেন স্হপতি হাফিজ ও জিয়া স্যার।

Picture3সাইফুর রশীদ ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৯৭ সালে।  পাস করে বের হওয়ার পরই সাইফুর রশীদ যোগ দেন ‘üদ্ধি আর্কিটেক্ট’স নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্মে।  সেখানে দেড় বছর চাকরি করার পর আরবান হেভিটেট লিমিটেড নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্মে যোগ দেন।  সেই প্রতিষ্ঠানে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে পাঁচ বছর চাকরি করেন।  তারপর ২০০৬ সালে আর্কিটেক্ট সাইফুর রশীদ নিজে গড়ে তোলেন ‘আরডিসিএল’ নামের একটি কনসালটেন্সি ফার্ম।  বর্তমানে স্হপতি সাইফুর এই ফার্মের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোডে তিনি খুব সুন্দর একটি অফিস সাজিয়েছেন।  তার প্রতিষ্ঠানে অভিজ্ঞ স্হপতিসহ মোট ১৩ জন কর্মী কাজ করছেন।  ইতিমধ্যে সাইফুর রশীদ দেশে নামকরা গলফ ক্লাব, ট্রেনিং সেন্টার, গার্ডেন, কমার্শিয়াল টাওয়ার, শপিং সেন্টার, অফিস বিল্ডিংসহ অসংখ্য বিল্ডিংয়ের কাজ করেছেন।  তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসএসএফ বিল্ডিং, রংপুর ক্যান্টনমেন্টের স্টেশন ক্লাব, বগুড়ার গলফ ক্লাব হাউজ, শ্যামলীর হেভিটেট সেন্টার, উত্তরার হেভিটেট গার্ডেন, মিরপুরের মিনা হাউজ, শ্যামলীর ভৈরবী গার্ডেন, নাখাল পাড়ার এসএসএফ ট্রেনিং সেন্টার, রংপুরের সেনা অডিটোরিয়াম, স্মাটটেক্স আউটলেট, ডমিনাস পিজ্জার সবগুলোর আউটলেট, কানাডা হাই কমিশন বিল্ডিংসহ অসংখ্য অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং।

নতুন প্রজেক্টের কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন সাইফুর রশীদ।  তিনি সব ধরনের কাজ স্হাপত্য নীতি ও রাজউকের নিয়ম মেনেই করেন।  ২০০১ সালে তিনি বিয়ে করেন।  স্ত্রীর নাম শায়কা ইমাম।  তিনিও একজন সফল আর্কিটেক্ট।  এই দম্পত্তি এক সন্তানের জনক-জননী।  মেয়ের নাম রৌদশী।  সে ধানমন্ডির ভিকারুননিসা স্কুলে ফাইভে পড়াশোনা করছে।  স্হপতি সাইফুর রশীদ বলেন, মানুষের স্বপ্ন অবিষ্কার করে সেটিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মধ্যে সার্থকতা খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি।  আমাদের স্হাপত্য শিল্পটা যেহেতু ম্যাটেরিয়ালিটিক সেহেতু শিল্পের প্রস্ফুটন খুবই কঠিন।  তাই এই দুরূহ কাজের চেষ্টাতেই আনন্দ।

গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি কাজে নজর দেন স্হপতি রেজা মোহাম্মদ সাইফুর রশীদ।  এই স্হপতি তার কাজ সততা ও নিষ্ঠার সাথে করতে ভালোবাসেন।  পেশার কাছে দায়বদ্ধ থেকে সেটাকে সততার সাথে শেষ করতে চেষ্টা করেন।  স্হাপত্য নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে স্হপতি সাইফুর রশীদ বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্হাপত্যকে একটা সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য দেওয়ার ইচ্ছা আছে আমার।