Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ষাট-এর ওপারে

আফজাল হোসেন

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে সংগঠনেরই কোনো কর্মীর জন্মদিন পালন করা সত্যিকার অর্থে অনন্য এক ঘটনা। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতেই পারে সংগঠন বড় না কর্মী বড়? উত্তরটা খুবই সহজ। কর্মী ছাড়া সংগঠন অচল। আবার সংগঠন আছে বলেই কর্মীর এত মর্যাদা। অর্থাৎ একে অন্যের পরিপুরক। তবে একথা সত্য সংগঠনের জন্মদিনে কর্মীর জন্মদিন পালনের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক উদারতা দরকার। যা দেখাল দেশের অগ্রগন্য নাট্য সংগঠন ঢাকা থিয়েটার। সংগঠনের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের একনিষ্ঠ কর্মী নাট্যব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেনের জন্মদিন পালন করেছে সাড়ম্বরে। চ্যানেল আই এর ছাদ বারান্দায় এ অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিল নাট্যকর্মীদের অনন্য সাধারন এক মিলন মেলা। নাট্যগুরু নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু স্বয়ং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। যা ছিল অনুষ্ঠানটির উজ্জ্বলতম একটা দিক।

ব্যানারে লেখা ষাটের ওপারে… তার মানে নন্দিত অভিনেতা, নির্মাতা আফজাল হোসেন ষাট পেরিয়েছেন। এখন তাঁর বয়স ষাট ও সত্তুরের মাঝামাঝি। কিন্তু তাকে দেখে কি ষাটের ওপারের মানুষ মনে হয়? না হয় না। কেন হয় না? কারন আফজাল হোসেন বয়সটাকে বেঁধে ফেলেছেন। এখনও তরুণ তিনি। তাঁর কর্ম ও মেধার দ্যূতি এতটাই উজ্জ্বল যে তাকে সর্বদাই মনে হবে তারুণ্যের প্রতিনিধি। সেদিন তাঁর জন্মদিন পালন উপলক্ষে বন্ধু, স্বজন, সহকর্মী সহ বিশিষ্ট জনেরা এমনটাই বললেন।

ঢাকা থিয়েটারে ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও আফজাল হোসেনের জন্মদিন পালন উপলক্ষে ঢাকা থিয়েটারের উদ্যোগে সেদিন চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় অনুষ্ঠানটি ছিল মায়া, মমতা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার চাদরে মোড়া। জন্মদিনের অনুষ্ঠান যে এতো মায়াময় ও আনৱরিকতাপূর্ণ হতে পারে তা দেখিয়েছেন ঢাকা থিয়েটারের কর্মীরা। অনুষ্ঠানে আফজাল হোসেনের কাছের বন্ধু, সহকর্মী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রায় সকলেরই অভিন্ন বক্তব্য- জন্মদিনের অনুষ্ঠান প্রাণ ছুঁয়েছে আমাদের। হ্যাপি বার্থ ডে ঢাকা থিয়েটার ও প্রিয় মানুষ আফজাল হোসেন।

Afzal-Hossianঅনুষ্ঠানে ঢাকা থিয়েটার নিয়ে স্মৃতিচারণা ও আফজাল হোসেনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন নাট্যজন আতাউর রহমান, অভিনেত্রী শিমূল ইউসুফ, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম, কামাল বায়েজীদ, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কণ্ঠশিল্পী লীনু বিল্লাহ, খুরশীদ আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা করেন ঢাকা থিয়েটারের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর বিশিষ্ট নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ।

আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে গান গেয়ে শোনান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, খুরশীদ আলম, লীনু বিল্লাহ ও দিনাত জাহান মুন্নী। আবৃত্তি করেন হাসান আরিফ। দিনাত জাহানের কণ্ঠে ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’ গানের সময় মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় আফজাল হোসেনকে। সে সময় মঞ্চে এসে গানের সঙ্গে নাচ করতে থাকেন অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী। তখন মনে হচ্ছিলো যেন এই গানের পাত্র-পাত্রী তাঁরা দুজন।   সহশিল্পীর এমন আনৱরিকতায় আফজাল হোসেনকে মিটি মিটি হাসতে দেখা যায়।

সবার উদ্দেশে আফজাল হোসেন বলেন, আমি জীবনে কিছুই প্রত্যাশা করিনি। হিসাব না করে শুধু পথ চলেছি। মনে হয়েছে পৃথিবীর পথে আমি নাম না-জানা এক পথিক। কোনো দিন চাইনি আমার প্রতি কেউ আকর্ষিত হোক। শুধু লোভীর মতো চেয়েছি, আমার ভাবনা ও কর্মের প্রতি মানুষ নজর দিক।