সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
মোহাম্মদ তারেক: প্রেমিক জুটি শপিংয়ে। প্যান্ট মাপ মতো হচ্ছে কীনা তা দেখার জন্য প্রেমিক গেছে ট্রায়াল রুমে। আর তখনই রবি থেকে ঐ অফারটা পায় সে। এতে খুশি হয়ে প্যান্ট না পরেই প্রেমিকাকে একা ফেলে দৌড়ে চলে যায় প্রেমিক। রবির বিজ্ঞাপনের এই প্রেমিকা চরিত্রের সেই মিষ্টি মেয়েটি বৃষ্টি। পুরো নাম বৃষ্টি ইসলাম। গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলায়। বর্তমানে ঢাকায় ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা তিনি।
বৃষ্টি ইসলাম নদার্ন ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছেন। সাবলীল অভিনয় শৈলীর কারণে বৃষ্টি এ প্রজন্মের একজন প্রতিশ্রুতিশীল মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে আলোচিত হয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মডেলিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চান তিনি। এরই মধ্যে বৃষ্টি মডেলিং জগতে খুব অল্প সময়ে কিছু ভালো কাজের মাধ্যমে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
ব্যক্তি হিসেবে বৃষ্টি একটু মিশুক প্রকৃতির। সহজেই সবার সাথে মিশতে পারেন। মিষ্টি হাসি ও প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় মাতিয়ে রাখেন সবাইকে। কাজে খুব সিরিয়াস এবং সিনসিয়ারিটি মেইনটেন করেন। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভালো বলে বৃষ্টির ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবেন কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবেন। সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি তার। কিন্তু তিনি হয়েছেন একজন মডেল।
আসার পেছনে তার একটা গল্প আছে। বৃষ্টি অকপটে বলে গেলেন সেই গল্প আমার বয়ফ্রেন্ড নাহিদ অনেক আগে থেকেই মিডিয়ায় কাজ করে। র্যাম্প মডেলিংয়ে তার ভালো একটা অবস্হান রয়েছে। মাসুদুল হাসান পরিচালিত ‘সাফিয়া’ নামের একটি সিনেমায় সে সুযোগ পায় নায়ক হিসেবে। কিন্তু পরিচালক চান এক বাস্তবের প্রেমিক-প্রেমিকা জুটি। যাতে ছবিতে তাদের আবেগ কৃত্রিম মনে না হয়। অনেক খোঁজাখুজির পরও কাউকে পরিচালকের মনে ধরেনি। অবশেষে কীভাবে যেন আমার ছবি দেখেন তিনি। দেখেই পছন্দ করে ফেলেন। কথা বলেন নাহিদের সঙ্গে। নাহিদও আমাকে উৎসাহ দেয়। ভেবে দেখলাম আপন লোকের সঙ্গেই তো অভিনয় করবো। তাই কিছুটা লজ্জা থাকলেও রাজি হয়ে যাই। যদিও কোনো এক কারণে পরে আর ছবিটি শেষ হয়নি। পরের গল্প অনেকেরই জানা। হাফস্টপ ডাউনের আশফাক-উজ-জামান বিপুল ফেসবুকে ছবি দেখে স্যামসাং মোবাইলের একটি টিভিসির জন্য বৃষ্টিকে নির্বাচন করেন। ২০১৩ সালের শেষের দিকে এই টিভিসির শুটিং হয়েছিল। এরপরই তিনি চোখে পড়েন রবি কতর্ৃপক্ষের। তার সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করে রবি। রবির বিজ্ঞাপনটি ছিল বৃষ্টির জন্য টার্নিং পয়েন্ট। এই বিজ্ঞাপনটির মাধ্যমে সবাই বৃষ্টিকে চিনতে শুরু করে।
তার ক্যারিয়ারে তৃতীয় আর রবির দ্বিতীয় বিজ্ঞাপনটি করেন। বিজ্ঞাপনটি দর্শক মহলে বেশ প্রশংসিত হয়। রবির স্পেশাল প্যাকেজের এই বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। রবির বিজ্ঞাপনচিত্রে তার ক্যারিয়ারে যোগ করে নতুন মাত্রা। রবির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দর্শক পরিচিতি অনেক বেড়ে যায় বৃষ্টির। এরই মধ্যে রবির সাতটি টিভিসিতে মডেল হয়েছেন বৃষ্টি। মূলত এ বিজ্ঞাপনগুলোই তাকে দর্শকের কাছাকাছি পৌঁছে দেয়। আর বৃষ্টিও বড় বড় নির্মাতার সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে যান। ফলে মিডিয়ায় জায়গা করে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি তাকে।
খুবই ভাগ্যবান। কখনো মিডিয়ায় কাজ করব, আমার নাম পত্রিকার পাতায় ছাপা হবে এ সব স্বপ্নেও ভাবিনি। ভাগ্যই আমাকে এ জগতে টেনে এনেছে। আমিও আমার এই সৌভাগ্যকে বরণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ছিল না মেয়ে মিডিয়ায় কাজ করুক। বৃষ্টি বলেন, ইচ্ছা না থাকলেও কাজে কখনো বাঁধা দেননি তারা। তবে তাদের কিছু বিধি নিষেধও আছে যেমন ঢাকার বাইরে টানা দু’তিন দিন বিজ্ঞাপনের শুটিং করায় নিষেধ আছে। এজন্য বেশ কিছু ভালো কাজও আমাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। ভবিষ্যতে আমি ভালো কাজ করে তাদের মন জয় করতে চাই। তখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারবো।
যাবৎ বৃষ্টি ১৬টির মতো বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছেন। তার অভিনীত বিজ্ঞাপনগুলো হচ্ছে অমিতাভ রেজা, মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় রবির আলাদা আলাদা টিভিসি, টিটো রহমানের এসিআই সল্ট, আশফাক-উজ-জামান বিপুলের স্যামসাং মোবাইল ফোন ও এসএমসির ওরস্যালাইন, অম্লান বিশ্বাসের মোট্রেকবাইক, নাফিজের প্রাণ রকার ওয়েফার ইত্যাদি। বর্তমানে বৃষ্টি ইসলামের বেশির ভাগ বিজ্ঞাপনই প্রচার হচ্ছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। রবি, আপন জুয়েলার্স, এয়ারটেল, জরডানা, অরা বিউটি লাউঞ্জসনহ বেশ কয়েকটি কোম্পানীর বিলবোর্ডের মডেল হয়েছেন তিনি। বেশ অল্প সময়ের মধ্যে মডেলিং জগতে আলোচনায় চলে এসেছেন বৃষ্টি।
যায় না। মাত্র দু’একটা নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। বৃষ্টি বলেন, বেশির ভাগ নাটকের শুটিং ঢাকার বাইরে থাকায় আমার পক্ষে অভিনয় করা সম্ভব হচ্ছে না। পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। ভবিষ্যতে আমি ভালো একজন মডেল হতে চাই।