Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ত্যাগের মহিমায় আলোকিত হোক এবারের ঈদ উৎসব

সারওয়ার হাসান
আর মাত্র কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঘরে ঘরে তাই আনন্দ আর খুশির বান ডেকেছে। যদিও এই খুশির মাঝে কিছুটা হলেও বাদসেদেছে দেশের প্রলঙ্করী বন্যা পরিস্থিতি। দেশের বিস্তৃত অঞ্চল বন্যায় ডুবে আছে। কথায় আছে আগুন আর বন্যা কিছুই রাখে না। আগুন সবকিছু পোড়ে। আর বন্যা ধুয়ে মুছে সবকিছু নিয়ে যায়। এবারের বন্যা সবকিছুই ধুয়ে মুছে নিয়ে গেছে। সড়ক ডুবেছে। রেল লাইন ডুবেছে। গ্রামের পর গ্রাম ডুবেছে। কোথাও আশ্রয় নেয়ার উঁচু মাটি পর্যন্ত নাই। বানের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। দেশের পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন মাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবারের বন্যার ভয়ঙ্কর চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে প্রতিদিন।
দেশের এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে এবারের ঈদটা কি সত্যি সত্যি আনন্দমুখর হবে? অনেকে ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির এই ঈদে পশু কোরবানির না দিয়ে পশু কেনার টাকা বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করার পরামর্শও দিয়েছেন। কোরবানির অর্থই হলোÑ ত্যাগ স্বীকার করা। অন্যকে অর্থ সাহায্য করাও তো একধরনের ত্যাগ। এক্ষেত্রে ধর্মীয় বিধান মেনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াই হবে যুক্তিযুক্ত।
তবে একটি কথা না বললেই নয়। সময়ের দাবি বলে একটি কথা আছে। ঈদ আমাদের প্রধান ধর্মী উৎসব। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। তবুও সময়কে গুরুত্ব দিয়েই আমরা যেন আনন্দ ফুর্তির আয়োজন ফুরি।
ঈদুল আজহা ত্যাগের মহিমা ছড়াতেই আমাদের মাঝে আসে। আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় নবী হযরত ইব্রাহীম (আ:) তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য তৈরি হয়েছিলেন। প্রিয় নবীর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে মহান আল্লাহ সেদিন পিতা কর্তৃক পুত্রকে কোরবানি দেয়া থেকে বিরত রাখেন। মহান আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় নবী হযরত ইব্রাহীম (আ:) একটি উট কোরবানি দেন। সেই থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন পশু কোরবানি দেয়ার ধর্মীয় বিধান চালু হয়। ধর্মীয় বিধানে পশু কোরবানি দেয়া প্রসঙ্গে উল্লেখ আছে, ঈদুল আজহায় অনেক আদরে লালন-পালন করা পশু জবাই করতে হবে। অর্থাৎ অনেক আদরের বিষয়কেও ত্যাগ করতে হবে।
বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানোও তো এক ধরনের ত্যাগ স্বীকার করা। আমরা যারা এই ঈদে কোরবানি দিব তারা যেন বানভাসী মানুষের সীমাহীন দুঃখ কষ্টের কথাও মাথায় রাখি। আমাদের বিবেচনায় পবিত্র ঈদকে উপলক্ষ করে বানভাসী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হবে প্রকৃত ত্যাগ স্বীকারের ঘটনা।
আনন্দ আর দুঃখ পাশাপাশি হেঁটে চলে। কাজেই দুঃখকে সামলে নিয়েই আনন্দের পসরা সাজাতে হবে। এবারের ঈদে আমরা নিশ্চয়ই সেটা করব।
প্রিয় পাঠক, পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা নিন। বিজ্ঞাপন প্রদানকারী সকল বন্ধু, প্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ঈদ মোবারক।