Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ক্রিকেট তারকাদের বিয়ে সংসার সুখের হয় উভয়ের গুণে…

মুশফিকুর রহিম ও মন্ডি

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এবং দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ও উইকেট কিপার। দলের অনেক কঠিন মুহূর্তে হাল ধরেছেন মুশফিক। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দলকে জয়ী করে মাঠ ছেড়েছেন। দলের সাহসী এই লড়াকু ক্রিকেটার ব্যক্তিজীবনেও সৎ, সাহসী ও পরিবার অন্তপ্রাণ মানুষ।  খেলা বাদে বাকি সময় নিজের পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চান। মাঝে মধ্যে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশ থেকে ঘুরে আসেন। বাংলাদেশ টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর শ্যালিকা জান্নাতুল কিফায়াত মন্ডিকে বিয়ে করেছেন মুশফিকুর রহিম। সেই সম্পর্কে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ভায়রা ভাই।

সম্পর্কিত

মন্ডি একজন ক্রিকেট পাগল মানুষ। স্বামী মুশফিকের খেলা থাকলে তার টেনশনের অন্তথাকে না। কোনো কাজে মন বসাতে  পারেন না। ক্রিকেট, সংসার সব জায়গায় মুশফিককে সবসময় পেছন থেকে সাহস জুগিয়ে যান তিনি।

মাঠের তারকা বলেই কি মাঠের বাইরে তাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই? খেলা থাকলে আজ এখানে, কাল ওখানে, দেশে কিংবা দেশের বাইরে হরহামেশা যেতে হয়। খেলার বাইরে কেউ কেউ অভিনয়ও করেন, কেউবা বিজ্ঞাপন চিত্র অথবা প্রচারণামূলক কাজে ব্যসৱ থাকেন। এত কিছুর ভিড়ে ক্রিকেটারদের পারিবারিক জীবনও তো আছে।

পারিবারিক জীবন সত্যিকারেই একজন পরিপূর্ণ মানুষের আসল জীবন। সুন্দর, সৎ জীবন ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা অর্থহীন। ধরা যাক, বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের গর্বিত অধিনায়ক মাশরাফির কথা। ক্রিকেট বিশ্বে তিনি একজন সফল ক্রিকেটার। অধিনায়ক হিসেবেও মাশরাফি সেরা। তার পারিবারিক জীবন যেন আরো বেশি সুখের। স্ত্রীর সঙ্গে তার বোঝাপড়াটা চমৎকার। বরাবরই মাশরাফি স্ত্রী ও পরিবার নিয়ে কথা বলেন মিডিয়ার সঙ্গে। সেখানে তিনি বারবারই বলেন পরিবারই হচ্ছে একজন মানুষের অসাধারণ মুহূর্তগুলো কাটানোর একমাত্র জায়গা। তাই সবার আগে পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য, ভালোলাগা- মন্দলাগার বিষয় ভাবতে হবে। পরিবারই সবকিছু। ক্রিকেট ইজ জাস্ট আ গেম। শুরু বলেন আর শেষ, সবই পরিবার। এটি সীমাহীন, যার অর্থ বের করা যাবে না। ক্রিকেট তারকারা এখন আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও তাদের জনপ্রিয়তা। তবে এক্ষেত্রে তাদের সুন্দরী স্ত্রীরাও কম যান না। সাকিব আল হাসান আমাদের ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি বিয়ে করেছেন সুন্দরী, স্মার্ট ও শিক্ষিত নারী শিশিরকে। শিশিরও এখন সেলিব্রেটি। মডেলিং করেছেন বেশকটি বিজ্ঞাপনের এবং একটি প্রতিষ্ঠানের তিনি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এমনি ভাবে ক্রিকেট তারকাদের অনেকের স্ত্রী নানা গুণে গুণবতী। সেখবর হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। এবার জেনে নেয়া যাক ক্রিকেট তারকাদের বিয়ে এবং তাদের স্ত্রীরা কে কেমন?

মাশরাফি ও সুমী

mashrafee-wifeক্রিকেটের বাইরে একেবারে সাদাসিধে মানুষ মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রচণ্ড মিশুক মানুষ তিনি। প্রচণ্ড সাহসী ও আত্মবিশ্বাসীও বটে। বারবার ইনজুরিতে পড়ার পর আবারও সমহিমায় ফিরে এসেছেন ক্রিকেট মাঠে। অসম্ভব রকম মনের জোর না থাকলে হাঁটুর এক জায়গায় আটবার অপারেশন করার পরও মাঠে ফিরে আসাটা অনেকের কাছেই মিরাকল। মাশরাফির এই দুঃসময়ে বেশি সাহস জুগিয়েছেন তার প্রিয়তমা স্ত্রী সুমী। সুমীর সঙ্গে মাশরাফির পরিচয় অনেক আগে থেকে। যখন তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক উদীয়মান তারকা। অত্যন্ত ধীরস্থির আর বুদ্ধিমান মাশরাফিকে সুমী পছন্দ করে বিয়ে করেছেন। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘর আলো করে রেখেছে তাদের এক মেয়ে হুমায়রা এবং ছেলে সাহেল।

তামিম ও অয়েশা

tamim-wifeযাকে বলে হ্যাপী কাপল। তামিম ও আয়েশা সেলিব্রেটিদের মধ্যে সবচেয়ে সুখি দম্পতি। তামিম ইকবাল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। জনশ্রুতি আছে, তামিম যেদিন ভালো ব্যাট করেন বাংলাদেশ সেদিন জয়ের হাসি হাসে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম ইকবাল সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং করে থাকেন। এজন্যই ইংল্যান্ড থেকে প্রকাশিত ক্রিকেটের বাইবেল বলে খ্যাত ওয়েজডেন পত্রিকায় প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে প্রচ্ছদ হয়েছেন।

তামিম ও আয়েশার বিয়ে দীর্ঘ প্রেমের সফল। আয়েশা মালয়েশিয়া পড়াশোনা করতেন। ফোন বা ফেসবুকে সবসময় যোগাযোগ হলেও সময় সুযোগ পেলে তামিম প্রিয়তমা আয়েশাকে এক নজর দেখার জন্য মালয়েশিয়ায় উড়াল দিতেন। এমনি করে দু’জনের প্রেম পরিণয়ে আবদ্ধ হয় ২০১৩ সালের ২২ জুন। এদেশে সেলিব্রেটিদের বিয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে জমকালো ও ব্যয়বহুল বিয়ে তামিম ও আয়েশার। দেশের মন্ত্রী, আমলা, ঊর্ধ্বতন সরকারি, বেসরকারি কর্তা ব্যক্তি, মিডিয়ার বিশিষ্টজনেরা এই বিয়েতে আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলেন। তামিম আয়েশার সংসার আলোকিত করেছেন তাদের একমাত্র পুত্র সনৱান আরহান ইকবাল খান।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মিষ্টি

mahmudullah-wifeবাংলাদেশ ক্রিকেটের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নম্র-ভদ্র, স্বল্পভাষী এক মানুষ। খেলোয়াড় জীবনে যেমন নিজেকে আড়াল করে রাখেন তেমনি তার ব্যক্তি জীবনটাও লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন। রিয়াদ গত বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফর্ম করে বিশ্ব ক্রিকেট বোদ্ধাদের নজর কাড়েন। এক বিশ্বকাপে দু’টি সেঞ্চুরি করে দলকে সেরা আটে তুলে আনেন। মাঠে যেমন তিনি একজন সফল খেলোয়াড়, তেমনি ব্যক্তি জীবনেও সুখী একজন মানুষ। ২৫ জুন ২০১১ সালে মাহমুদউল্লাহ প্রেম করে বিয়ে করেন জান্নাতুল কাওসার মিষ্টিকে। মিষ্টি খুব ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট ভক্ত। ক্রিকেট বাংলাদেশের খেলা থাকলেই টিভি সেটের সামনে বসে পড়েন। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হতেন মিষ্টি। স্বামীর খেলা থাকলেই মিষ্টির যেন টেনশনের শেষ নেই। স্বামীকে খেলার আগে সাহস যোগানো এবং খেলা শেষে অভিনন্দন জানাতে মিষ্টি ভুলেন না কখনো। মিষ্টি ব্যক্তি জীবনে মুশফিক রহিমের স্ত্রী মন্ডির বড় বোন। মাহমুদউল্লাহ ও মিষ্টির জীবনে ৩ জুন একটি বিশেষ দিন। এই দিনে অর্থাৎ ২০১২ সালের ৩ জুন এই দম্পতির ঘর আলো করে এক পুত্র সনৱান জন্ম নেয়। তার নাম রাখেন রাঈদ।

সাকিব ও শিশির

shakib-sishirবাংলাদেশ ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশ্ব ক্রিকেটে অলরাউন্ডার হিসেবে গত অর্ধযুগ ধরে এক থেকে তিনের মধ্যে রাজত্ব করে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এক সময় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন। সারাবিশ্বে যত নামি-দামি প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রায় প্রতিটিতে সাকিব এখন নিয়মিত খেলে থাকেন এবং সপরিবারে সেই খেলাগুলো উপভোগ করেন। সাকিব বিয়ে করেন ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর (১২.১২.১২) তারিখে। সেই হিসেবে তার বিয়ের বয়স এখন চার বছর হবে- এই ডিসেম্বরের ১২ তারিখে।

সাকিব ও তার স্ত্রী শিশিরের প্রথম দেখা হয় লন্ডনে। ইংল্যান্ডের কাউন্ট্রি ক্রিকেট খেলার সময় পরিচয়। তারপর দু’জনের মধ্যে আলাপ, ঘনিষ্ঠতা। এরপর ফেসবুকে চ্যাট করতে করতে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সেই বন্ধুত্ব এক সময় প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। তারপর পারিবারিকভাবে দু’জন বিয়ে করেন। সাকিব শিশির দম্পতিকে বলা হয় পারফেক্ট কাপল। সংসারে দু’জন যেমন মানানসই, তেমনি ভালো বোঝাপড়া রয়েছে তাদের মধ্যে।

সাকিব আল হাসান ক্রিকেট খেলার বাইরে হোটেল, ইভেন্ট গার্মেন্টস ও অর্নামেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে দেশ-বিদেশে খেলায় ব্যসৱ থাকায় তার সব ব্যবসা দেখাশোনা করেন শিশির। দু’জনে এক সঙ্গে বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। ফ্যাশন শো সেলিব্রেটি শো, টিভি প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে থাকেন তারা। সাকিবের ক্রিকেট খেলার একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শিশির। এখনও তিনি সময় পেলে গ্যালারিতে বসে সাকিবের খেলা দেখেন।

আব্দুর রাজ্জাক ও ইশরাত

razzak-cricketer-wifeবাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। মোহাম্মদ রফিকের পর বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন রাজ্জাক। বাংলাদেশ দলের সিনিয়র এই ক্রিকেটার  গ ওভারে ভালো ব্যাটও করতেন। দেশের অনেক জয়ে রাজ্জাক বড় ভূমিকা রেখেছেন উইকেট শিকার ও আপ বলে বেশি রান করে। রাজ্জাক ব্যক্তিজীবনে অনেক সুখী মানুষ। তিনি ২০০৯ সালে বিয়ে করেন। এই দম্পতির একমাত্র ছেলের নাম আদিয়ান।

শাহরিয়ার নাফিস ও ঈশিতা

shahriar-nafeesবাংলাদেশ ক্রিকেটে হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস। বাংলাদেশ দলের এক সময়কার ওপেনিং ব্যাটসম্যান। পরবর্তীতে জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়লেও এবার দলে জায়গা করে নেয়ার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছেন। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নাফিস এবারের বিপিএল-৪ আসরে বরিশাল বুলস-এর হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন। এবং বরিশালের চারটি জয়ে বড় অবদান রেখেছেন। চট্টগ্রামের এই ক্রিকেটার প্রেম করে বিয়ে করেন বরিশালের মেয়ে ঈশিতাকে। ঈশিতাও একজন ক্রিকেট পাগল মানুষ। নাফিসের খেলা দেখেই প্রেমে পড়ে যান। তারপর ২০১০ সালে বিয়ে করেন। তাদের ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক পুত্র সনৱান।