Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এই সময়ে পরিবার ভাবনা

দেশের সকল পরিবারের প্রতি আমাদের ছোট্ট জিজ্ঞাসা- আপনি কি আসলেই জানেন আপনার সনৱানের বন্ধু কারা? সে প্রতিদিন কোথায় যায়, কার সাথে মিশে? সে কি বাংলাদেশের সিনেমা দেখে, বাংলাদেশের গান ভালোবাসে? বাংলাদেশের সাথে যখন অন্যকোন দেশের ক্রিকেট, ফুটবল অথবা এ জাতীয় কোন খেলা থাকে তখন সে কোন পক্ষকে সাপোর্ট করে? সে কি আপনার ভালো বন্ধু? নাকি দূরে দূরে থাকে? সে কি আপনাকে ভয় পায়? সে কি আপনার সাথে সময়ে অসময়ে দুব্যবহার করে? ছেলে-মেয়েদেরকে কি আপনি সারপ্রাইজ দেন? বেড়াতে নিয়ে যান? তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এই কথাটিই কি তাকে জোর দিয়ে বলেন নাকি তাকে সাহস যোগান- আজ হয়নি, কাল নিশ্চয়ই হবে? প্রতিবেদনটির প্রয়োজনে দেশের উজ্জ্বল কিছু তারকা পরিবারের ছবি ব্যবহার করা হলো। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। লিখেছেন রেজানুর রহমান

তৌফিক সাহেবের বড় নাতীর বয়স ১৭ বছর। স্কুল পেরিয়ে কলেজে উঠেছে। অথচ এর মাঝে মাত্র দু’বার আদরের নাতিকে সামনা সামনি দেখেছেন তিনি। এর একটাই কারন তৌফিক আহমেদ গ্রামে থাকেন। আর বড় ছেলে শফিক থাকে ঢাকা শহরে। শহর থেকে কেউ গ্রামে যেতে চায় না আবার গ্রামে যিনি থাকেন তিনি শহরের ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। অথচ দেশের কত উন্নতি হয়েছে। পাকা রাসৱাঘাট। আকাশ পথেও সহজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আসা যাওয়া করা যায়। তবুও শফিক গ্রামের ব্যাপারে অতটা উৎসাহী নয়। ছেলেও হয়েছে বাবার মতো। শহরের বাসা ছাড়া একদন্ড কোথাও থাকতে চায় না। ছেলেটা হয়েছে ঘর কুনো স্বভাবের। আত্মীয় স্বজনের সামনে খুব একটা আসে না। কলেজ থেকে বাসায় ফিরেই দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরে ঢোকে। অথবা খাওয়া দাওয়া সেরে বন্ধুর কাছে যাবার নাম করে বেড়িয়ে যায়। যখন মনচায় তখন বাসায় ফেরে। এই নিয়ে তৌফিক সাহেবের  জোর আপত্তি। শফিককে বার-বার তাগাদা দিয়েছেন- ছেলেকে সামলা। ও তো আদব কায়দাও শিখেনি। গুরুজনকে দেখে সালাম দেয় না। ভালো করে কথাও বলে না। কিসব ফেসবুক নিয়ে মেতে থাকে। সময় থাকতে ছেলের প্রতি নজর দে। শফিক বাবার কথায় পাত্তা দেয় না শুধু হাসে। চিনৱা করো না বাবা। ওকে ওর জগতে থাকতে দাও। ওদের যুগটাই এখন এমন। একা থাকে। নিজেকে নিয়ে মেতে থাকা এটাই যেন যুগের স্মার্টনেস।

তৌফিক সাহেব ছেলের কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারেন না। তবে তিনি নিশ্চিত কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। একা স্বভাবের এই ছেলে একদিন একাই বড় ঝামেলা বাঁধাবে। তিনি সিদ্ধানৱ নেন শুধু শফিক নয় মেঝ ছেলে রফিক, ছোট ছেলে মানিক, একমাত্র মেয়ে মিনা সবাইকে গ্রামের বাড়িতে ডাকবেন। সবার সাথে কথা বলা দরকার। অসুস্থতার কথা বলে ছেলে-মেয়েদের কাছে মোবাইলে মেসেজ পাঠালেন। বাড়ির লোকজনকে বলে রাখলেন এরপর হয়তো ফোনের পর ফোন আসবে। সবাইকে বলতে হবে তৌফিক সাহেব সত্যি সত্যি বেশ অসুস্থ। এবার বোধকরি বাঁচার সম্ভাবনা নাই।

Family-1মোবাইলের মেসেজে কাজ হলো। ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রামের বাড়ি ভরে গেল। তৌফিক দেখলেন তার তো অনেক বড় সংসার। বড় ছেলের পরিবারে ৫ জন, মেজ ছেলের পরিবারে ৪ জন, সেজ ছেলের পরিবারে ৪ জন, একমাত্র মেয়ের পরিবারে ৫ জন সব মিলিয়ে ২০ জনের একটি পরিবার। চারদিকে হৈ চৈ আর আনন্দ। তৌফিক আহমেদ আনন্দের সাগরে ভেসে উঠলেন। যৌথ পরিবারে এত আনন্দ। ফেলে আসা দিনগুলোর কথা ভাবলেন। তৌফিক সাহেবের ভাই-বোনের সংখ্যা ৭। একান্নবর্তী পরিবারে সকলে বড় হয়েছে। এখন ৭ জনের ৭টি পরিবার। গড়ে ১০ জন করে সদস্য ধরলেও মোট ৭০ জনের বিরাট পরিবার। দূর্ভাগ্য কারও সাথে কারও যোগাযোগ নাই।

সন্ধ্যায় ছেলে মেয়ে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসলেন তৌফিক আহমেদ। বেশ বড় ড্রয়িংরুম। তবুও সবার জায়গা হচ্ছে না। গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করে বসলো সবাই। তৌফিক আহমেদ কথা বলার আগেই বড় ছেলে শফিক কথা তুলল। তার অভিযোগ বাবা অসুস্থ নন অথচ অসুস্থ্যের কথা বলা সবাইকে ডেকে এনেছেন। এটা ঠিক হয়নি। বড় ভাইয়ের কথায় শায় দিল রফিক। সে আরও বেশী ক্ষুব্দ। আজ ব্যবসার প্রয়োজনে তার ঢাকায় থাকা উচিৎ ছিল। অথচ কথা নাই বার্তা নাই। মোবাইলে এলো মেসেজ। এসবের কোনো মানে হয় না…

অন্যরাও বাবাকে অপরাধী ঠাওরালো। ভাবটা এমন মিথ্যে কথা বলে সবাইকে গ্রামে এনে বাবা বড় অন্যায় করেছেন। ছেলেদের বউয়েরা আরও বেশী ক্ষুব্দ। যে যার মতো করে চলে যাবার সিদ্ধানৱ জানাতে থাকলো। কেউ গাড়ি ঠিক করে ফেলেছে। সড়ক পথে এখনই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করতে চায়। কেউ চলে যাবে রাতের বাসে। তৌফিক সাহেব সবাইকে থামালেন। অপরাধীর ভঙ্গিতে ছেলে-মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন- হ্যাঁ আমি একটা ভুল করেছি। মিথ্যে কথা বলে তোমাদেরকে এভাবে গ্রামে ডেকে আনা আমার উচিৎ হয়নি। তোমরা সবাই এত ব্যসৱ থাকো যে…

বড় ছেলে বিরক্ত কণ্ঠে বলল- বাবা আপনি বোধকরি আমাদেরকে কিছু বলতে চান। যা বলতে চান তাড়াতাড়ি বলুন। আমি রাতেই ঢাকার দিকে রওনা দিব। মেজ ছেলে ব্যসৱ হয়ে বলল- বাবা যা বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন। আমরা এক্ষুনি ঢাকার দিকে রওনা দিব।

মেয়ে কিছু একটা বলতে চাচ্ছিল তৌফিক আহমেদ তাকে থামিয়ে দিয়ে সবার দিকে তাকালেন। বললেন- তোমরা আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাও তো…?

বড় ছেলে বলল- বাবা বলেন… প্রশ্নটা কি? তৌফিক আহমেদ বললেন- আমার অবর্তমানে তুমিই এই পরিবারের অভিভাবক। আচ্ছা তুমিই বলোতো আমাদের গোটা পরিবারে সদস্য সংখ্যা কত? বড় ছেলে বিরক্ত কণ্ঠে বলল- এটা আবার কেমন প্রশ্ন? আমারা কি আপনার কাছে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে এসেছি?

সুযোগ পেয়ে একমাত্র মেয়ে তৌফিক আহমেদের পক্ষ নিয়ে বড় ভাইকে প্রশ্ন করল- ভাইজান আব্বা ঠিকই প্রশ্ন করেছেন। আমার ছেলে-মেয়ে কয়জন বলেন  তো! সেজ ভাইয়ের একটা ছেলে এবার প্রাথমিক বৃত্তি পেয়েছে। আপনি কি ওর নাম জানেন?

পরিস্থিতি হঠাৎ করেই পাল্টে গেল। পরীক্ষার আগের রাতে পড়া মুখস্থ করার মতো একে অন্যের পরিবারের খোঁজ নিতে শুরু করলো। তৌফিক আহমেদ অসহায়ের মতো ছেলে-মেয়ে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকাচ্ছেন। অতীত দিনের কথা মনে পড়ে গেল  তার।

প্রিয় পাঠক, এটি একটি প্রতীকি গল্প। বাসৱবের সাথে এর কোনো মিল নাই। কিন্তু সময়ের সাথে এর অনেক মিল আছে। আপনি জানেন কী আপনার ভাইবোন যারা এখন সংসারী হয়েছে তাদের ছেলে-মেয়েদের নাম কী? তারা কে কি করে? অতদূরে যাবার দরকার নাই। নিজের পরিবারের দিকে একবার তাকান তো। ছেলে-মেয়েরা স্কুল কলেজে পড়ে। জানেন কী ওদের বন্ধু কারা, ওরা কার সাথে মিশে, কখন কোথায় যায়? আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। সে কারনে প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানা জরুরি।

Razzak-Familyযুগ পাল্টেছে। একটা সময় ছিল বাংলাদেশে যৌথ পরিবারের সংখ্যা ছিল অনেক বেশী। সেই সময়ে পরিবার গুলোর মধ্যে আত্মীক বন্ধনটা বেশ জোরালো ছিল। একজন অন্যজনের জন্য ছিল নিবেদিত প্রাণ। কালের বিবর্তণে যৌথ পরিবার ভাঙ্গতে শুরু করল। চাকরির প্রয়োজনে অথবা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছায় গ্রাম থেকে শহরের দিকে পা বাড়াতে থাকলো মানুষ। যৌথ পরিবার থেকে বাড়তে থাকলো একক পরিবার। সাথে সাথে বিচ্ছিন্নতাও দেখা দিল।

গবেষনায় দেখা গেছে যৌথ পরিবার থেকে যখনই একক পরিবারের সংখ্যা বাড়তে থাকলো তখনই মানুষ অনেকটা একা হয়ে যেতে থাকলো। যৌথ পরিবারে একটা শক্ত বন্ধন ছিল। সবাই মিলে আড্ডা হতো। আর কিছু না হোক আড্ডাও বিনোদনের অংশ। পরিবারের সদস্যরা আড্ডা দেয়ার সুযোগ পেলে আর কিছু না হোক পরিবারের অনেক জরুরি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। কেউ না কেউ সমস্যা উত্থাপন করে! আবার কেউ না কেউ তার সমাধানও করে দেয়। একক পরিবারে এই সুযোগ নাই। যার সমস্যা তাকেই সমাধান করতে হয়। ফলে সমস্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকলো। এক্ষেত্রে টিভি নাটকের ভূমিকার কথা তুললেন অনেকে। আমাদের দেশে টিভি নাটকে এখন আর দাদা, দাদী, নানা, নানী, চাচা, চাচী, ফুফা, ফুফু, মামা, মামীকে তেমন একটা দেখা যায় না। নাটক মানেই নায়ক আর নায়িকা। সাথে থাকবেন একজন ভিলেন। বড় জোর একটি কাজের মেয়ে আর কাজের ছেলে আর নায়ক অথবা নায়িকার বন্ধু অথবা বান্ধবী। পার্কে, রেসেৱারায় প্রেম, নাচগান অথবা মান অভিমান। অতঃপর মিলন দৃশ্য। অথচ একথা সত্য একটি টিভি নাটক পারিবারিক মূল্যবোধ সৃষ্টির ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কোনো টিভি চ্যানেলে একটি নাটকেরও নাম বলা যাবে না যার কাহিনীতে দাদা-দাদী, ফুফা-ফুফু, চাচা-চাচী অথবা এই ধরনের সম্পর্কের মানুষগুলো আছে। প্রচার মাধ্যম পরিবার গড়ার ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে টেলিভিশনের ভালো অনুষ্ঠান সুখি পরিবার গঠনে অনেক প্রেরনা দেয়। একসময় আমাদের দেশে যখন যৌথ পরিবারের ব্যাপক প্রভাব ছিল তখন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিশেষ করে নাটকেও যৌথ পরিবার কেন্দ্রিক কাহিনীকে গুরুত্ব দেয়া হতো। উদাহরণ স্বরূপ বিটিভি যুগের ঢাকায় থাকি, সকাল সন্ধ্যা, এইসব দিনরাত্রি সহ অনেক নাটকের নাম বলা যায়। নাটক গুলোতে পারিবারিক মূল্যবোধ বেশ স্পস্ট ছিল। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মায়া মমতার নিবিড় বন্ধন ছিল। সকাল সন্ধার শিমু আর শাহেদের মতো হতে চাইত অনেকে। আর এখন? টিভি নাটকের কোনো চরিত্রই যেন কাউকে টানে না। অথচ নাটক চলচ্চিত্র ও সঙ্গীতের মাধ্যমেই বর্তমান সংকটের সমাধান করা সম্ভব বলে অনেকে মনে করেন।

প্রিয় পাঠক আসুন না  আমরা একবার নিজেদেরকে আয়নায় দেখি। ফিরে তাকাই অতীতের দিকে। একদা আমাদের একটি বড় পরিবার ছিল। কালের বিবর্তণে পরিবারটি ভাগ হয়ে গেল। পরিবারের ৭ভাই-বোন। পরবর্তিতে ৭টি পরিবারে রূপ নিল। সেই সাত থেকে আরও অনেক সাত পরিবারের জন্ম নিল। তবে দূর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য। আমরা অনেকে পরিবারের সেই শেকড়টাকে মনে রাখিনি। যে যেমন ভাবে পেরেছি নিজের পরিবারকে গড়ে তুলেছি। এটাই আসলে বাসৱবতা। তাই বলে আমরা কি শেকড়কে ভুলে যাব? এইযে আমরা অনেকে তরুণ প্রজন্মকে দোষারোপ করছি। কিন্তু আমরা আসলে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য কি করছি? একবার ভাবুন তো শেষ কবে আপনার পরিবারকে নিয়ে মঞ্চ নাটক অথবা সিনেমা দেখতে গেছেন? শেষ কবে বেড়াতে নিয়ে গেছেন ছেলে-মেয়েদের? আপনার ছেলে অথবা মেয়েকে কি লাইব্রেরীতে বই পড়ার কথা বলেন? আপনার প্রিয় সনৱানের পছন্দের বিষয় কোনটি আপনি কি তা জানেন?

বাংলাদেশে এখন অনেক টিভি চ্যানেল। তা সত্বেও আপনার ছেলে-মেয়েরা হয়তো বিদেশী টিভি চ্যানেলের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। এব্যাপারে আপনি কোন খোঁজ খবর রাখেন? রাত জেগে পড়াশুনার কথা বলে ছেলে-মেয়েদের অনেকে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যসৱ থাকে অথচ আমরা অনেকে তা এড়িয়ে চলি। এক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েদেরকে গাইড করা জরুরি।

একথা সত্য, যে ছেলে অথবা মেয়েটি সংস্কৃতিচর্চার প্রতি যতবেশী আগ্রহী সে ততবেশী নির্মল চরিত্রের অধিকারী হয়। সে কারনে এই মুহূর্তে প্রয়োজন ছেলে-মেয়েদেরকে পড়াশুনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রতি আগ্রহী করে তোলা। এজন্য পারিবারিক ভাবে মঞ্চ নাটক, সিনেমা দেখতে যাওয়ার উদ্যোগ বাড়ানো যেতে পারে। স্কুল-কলেজ সমুহে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাড়ানো দরকার। লাইব্রেরির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলাও জরুরি। সন্ত্রাসী নয় একজন মেধাবী ছাত্র-অথবা ছাত্রীকে সবার সামনে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা জরুরি।

যারা নাটক, সিনেমা বানান তাদের উচিৎ সময় ও সমাজ বাসৱবতার, নিরীখে নিজেদের নির্মাণ ভাবনাকে আরও বেশী বিকশিত করা। এখন প্রয়োজন পারিবারিক মূল্যবোধ সম্পর্কিত নাটক, সিনেমা ও সঙ্গীতের বেশী বেশী উপস্থিতি। ধারাবাহিক নাটক, টেলিছবিতে পারিবারিক সম্পর্কের বাঁধন মজবুত করা জরুরি। তরুণরা উৎসাহিত হতে পারে এমন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে নাটক, সিনেমা নির্মাণ এখন সময়ের দাবী। শুধু নাটক নয় তরুণদের উৎসাহ দেয়ার জন্য প্রচার মাধ্যমে বিষয় ভিত্তিক অনুষ্ঠান আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে মেধাবী তরুণ-তরুণীদেরকে উৎসাহ প্রদানের জন্য প্রতিটি টেলিভিশন চ্যানেলে নানা মুখী অনুষ্ঠান নির্মাণের প্রতি জোর দেওয়া উচিৎ। পত্র-পত্রিকায়ও প্রতিদিন মেধাবী তরুণ তরুণীদের ফোকাস করা জরুরি।

যে যাই বলুক পরিবারই হলো মেধা চর্চার গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠান। কারন পরিবার থেকেই মেধাবী ও সৎ মানুষের জন্ম হয়।

সে কারনে পরিবারের প্রতিই আমাদের অনেক আস্থা ও ভরসা। আনন্দ আলো যেহেতু পরিবার ও বন্ধুর কথা বলতে চায় সে কারনেই এবারের এই বিশেষ প্রতিবেদন। দেশের সকল পরিবারের প্রতি আমাদের ছোট্ট জিজ্ঞাসা- আপনি কি আসলেই জানেন আপনার সনৱানের বন্ধু কারা? সে প্রতিদিন কোথায় যায়, কার সাথে মিশে? সে কি বাংলাদেশের সিনেমা দেখে, বাংলাদেশের গান ভালোবাসে? বাংলাদেশের সাথে যখন অন্যকোন দেশের ক্রিকেট, ফুটবল অথবা এ জাতীয় কোন খেলা থাকে তখন সে কোন পক্ষকে সাপোর্ট করে? সে কি আপনার ভালো বন্ধু? নাকি দূরে দূরে থাকে? সে কি আপনাকে ভয় পায়? সে কি আপনার সাথে সময়ে অসময়ে দুব্যবহার করে? ছেলে-মেয়েদেরকে কি আপনি সারপ্রাইজ দেন? বেড়াতে নিয়ে যান? তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এই কথাটিই কি তাকে জোর দিয়ে বলেন নাকি তাকে সাহস যোগান- আজ হয়নি, কাল নিশ্চয়ই হবে?

প্রিয় পাঠক, প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুঁজুন। আশাকারি, বুঝতে পারবেন এই মুহূর্তে আমাদের কি করা উচিৎ।