Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

উৎসবে হোক সঠিক চুলের যত্ন

চুলের যত্নে এই প্যাক, সেই প্যাক, আরও নানা কিছু ব্যবহার করছেন, কিন্তু পরিচর্যার একদম প্রাথমিক কিছু ধাপেই যদি থেকে যায় গলদ, তা হলে কি চলে? ‘শ্যাম্পু করা, তেল দেয়া- এসব তো রোজকার ঘটনা, এতে আর অত মনোযোগের কী প্রয়োজন’- এমন ভেবেছেন তো ভুল করেছেন। চুলের যতেœ খুব সাধারণ কিছু বিষয়ও জেনে নেয়া জরুরি। কারণ, অনেক ভুল ধারণাও রয়েছে এসব নিয়ে। এসব ভুল ধারণা থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে। নিয়ম করে চুলের যত্ন নেয়া অত্যাবশ্যক। তারমধ্যে ঈদ-পার্বণ কিংবা যেকোনো উৎসব মানে তো শরীরের পুরো যত্ন একটু অন্যভাবে নিতেই হয়। সেক্ষেত্রে চুলের বাড়তি যত্ন নেয়া বেশ জরুরি। দেখা গেছে সারা বছর ত্বকের যত্ন ভালোভাবে নেয়া হলেও চুলের যত্ন যদি সঠিকভাবে নেয়া না হয় তাহলে চেহারায় একটা মলিন ভাব থেকেই যায়। তাই উৎসবে অবশ্যই চুলের বাড়তি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। চুলের আর্দ্রতা, চুল পড়া কমানো, চুলের গোড়া মজবুত করানোসহ রুক্ষ ভাব দূর করার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত তেল ব্যবহার করা। আজকাল বাজারে এমনকিছু তেল পাওয়া যায় যা চুলের এসব সমস্যার সমাধান করে থাকে। আমলকি ওয়েল, জোজোবা ওয়েল, আর্গান ওয়েল, অলিভ ওয়েল, আমলা ও কোকোনাট ওয়েল- এর মিশ্রণে তৈরি হয়ে থাকে এসব তেল। যা চুল পড়া রোধ সহ চুলের আর্দ্রতা দূর করে থাকে।

আমাদের দেশের আবহাওয়ায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করা উচিত। যাঁরা রোজ বাইরে যান, তাঁদের জন্য এটি অবশ্যই করণীয়। বাইরে বের না হলে ধুলাবালুতে চুল তেমন ময়লা হয় না। তাই সে ক্ষেত্রে এক দিন পরপর চুল পরিষ্কার করলেও কোনো ক্ষতি নেই। তবে চুল ও মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে বাইরে বের না হলেও প্রতিদিনই শ্যাম্পু করতে হবে। এই নিয়ম যেকোনো ঋতুতেই মেনে চলা উচিত। আর শ্যাম্পু কী পরিমাণে নিতে হবে, তা নির্ভর করবে চুলের ঘনত্ব ও দৈর্ঘ্যরে ওপর। শ্যাম্পুর সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে নিলে চুল পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে। শ্যাম্পু করতে হবে দুবার।

চুল বেশি শুষ্ক হলে প্রতিবার শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনিং করা উচিত। অবশ্য চুল তেলতেলে হলে কন্ডিশনার এড়িয়ে যাওয়া যায়। মিশ্র ধরনের চুল হলে এক দিন পরপর কন্ডিশনার করলেও চলবে। আর এটি চুলে লাগাতে হবে চুলের আগা থেকে ওপরের দিকে। গোড়ায় কোনোমতেই লাগানো যাবে না। কন্ডিশনার ব্যবহারের পরিমাণও নির্ভর করবে চুলের দৈর্ঘ্যরে ওপর। ছোট চুল হলে কম, লম্বা হলে অপেক্ষাকৃত বেশি কন্ডিশনার নিতে হবে।

চুলের পুষ্টি জোগাতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করতে হয়। তবে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখার জন্য সপ্তাহে কয়েকদিন তেল ব্যবহার করা উচিত। ব্যস্ততার জন্য যদি সম্ভব না হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে তেল লাগাতেই হবে। চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হলে দুই দিন পরপর তেল ম্যাসাজ করা ভালো। তেল দিয়ে এক ঘণ্টার মতো রেখেই চুল শ্যাম্পু করে ফেলতে পারেন। অতিরিক্ত তৈলাক্ত চুল হলে ঘন ঘন তেল দেয়ার প্রয়োজন নেই।

বাড়িতেই চুলের যত্ন

Emami-1বাড়িতে বসেও চুলের যত্ন নেয়া সম্ভব। সাধারণত যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের চুলও তৈলাক্ত হয়। আর যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়। কেবল ঋতুভেদে নয়, চুলের প্রাকৃতিক যত্ন চাই প্রতিক্ষণ। চুলের যতেœর প্রথম ধাপ চুলের ধরন বোঝা। যাদের চুল তৈলাক্ত, তাদের চুলে প্রচুর খুশকি হয়। আর যাদের চুল শুষ্ক, তাদের চুল খুব দ্রæত রুক্ষ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, অনেকের প্রতিটি চুলই বেশ মোটা। তবে আসল কথা হলো রুট বা চুলের গোড়ার ধরন বোঝা। চুলের গোড়া মজবুত না হলে চুলের সৌন্দর্যের প্রায় পুরোটাই মাটি। তাই চুলের যতেœর মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ার যত্ন নেয়া।

চুল সুন্দর রাখতে প্রথমেই যত্ন নিন স্কাল্প বা মাথার ত্বকের। সপ্তাহে তিন দিন ছয় টেবিল-চামচ নারকেল তেল দিয়ে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন।

মাথায় খুশকির উপদ্রব? নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন লেবুর রস। এক ঘণ্টা মাথায় রেখে তারপর শ্যাম্পুু করুন।

একটি কাচের শিশিতে এক টেবিল-চামচ মধু ও চার টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা রেখে দিন। ব্যবহারের আগে আরেকবার ঝাঁকিয়ে নিন। চুলে পাঁচ-দশ মিনিট ম্যাসাজ করে আঁচড়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ পরে র‌্যাপ করে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু করুন। দেখুন না, প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের জাদু!

একটি ডিম, এক টেবিল-চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ঘষে ঘষে চুলে মাখুন। শাওয়ার ক্যাপ লাগিয়ে রেখে দিন আধা ঘণ্টার মতো। তারপর শ্যাম্পু করুন। এই প্যাক চুলে কন্ডিশনারের কাজ যেমন করবে, চুলকেও মজবুত করবে।

অনেকের মাথায় কিছু অংশের চুল পাতলা হয়ে মাথার ত্বক দেখা যায়। তাঁরা আমলকী বেটে পেস্ট করে তার রস লাগাবেন প্রতিদিন। দুই সপ্তাহ লাগানোর পর ফল পাবেন। আর কেউ চাইলে আমলকী মিশ্রিত তেলও ব্যবহার করতে পারেন। এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।