Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ঈদ উৎসব আয়োজন আপ্যায়নে চাই কিছু সতর্কতা

মোহাম্মদ তারেক

বছর ঘুরে আবার এলো কোরবানির ঈদ। আর ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। তাই ঈদ উৎসবকে নিয়ে কতনা উচ্ছ্বাস আয়োজন। ছোট-বড় সবাই মেতে উঠবে এই আনন্দ উৎসবে। ঈদের আনন্দটা শিশুদের যেন একটু বেশি। ঈদের ছুটি। স্কুল বন্ধ। শিশুরা কি আনন্দেই না কাটাবে দিনগুলো। কয়েকদিনের ছুটি পেয়ে শিশুরা এরই মধ্যে নানা বাড়ি কিংবা দাদা বাড়ি যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছে। কেউ কেউ চলেও গেছে। সারা বছর সম্ভব না হলেও অভিভাবকরা কোরবানি ঈদের ছুটির এই সময়টিতে শিশুদের আবদার রাখার চেষ্টা করেন। পড়াশোনার কারণে শিশুরা সারা বছর চাপের মধ্যে থাকে। ঈদ উৎসবে ছুটির সময়টাতে কী করবে তার পরিকল্পনা করতে থাকে। নানা রকম বায়নায় বাবা-মাকে অস্থির করে তোলে। অনেক সময় অফুরন্ত এই ছুটিটাই শিশুদের অসুখ বিসুখের কারণ হয়। হঠাৎ করে বেশ কয়েকদিনের ছুটি থাকায় শিশুদের চলতে থাকা নিয়মের হুট করে পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনটা শিশুদের শরীর সহজে মেনে নিতে পারে না। এ সময় শিশুরা লাগাম ছাড়া দুরন্ত হয়ে ওঠে। খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে খেলাধুলাই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে যায়। আর এই অনিয়মের কারণে শিশুদের অনেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই পরিবারের ছোট্ট সোনামণি অর্থাৎ আদরের শিশুদের যত্নআত্তির ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান হওয়া অতি জরুরি। আর গরমে তো এই যত্নের মাত্রাটা আরো বেশি হওয়া উচিত। অন্যান্য সময়ের তুলনায় গরমকাল শিশুদের জন্য কষ্টকর হয়ে থাকে। একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে বৃষ্টি। তাইতো গরম ঠাণ্ডার কারণে শিশুর শরীরে রোগ জীবাণু বাসা বাঁধে খুব সহজেই। ফলে এমন আবহাওয়ায় শিশুদের নানান অসুখ বিসুখ হতে পারে। যেমন- ঘামাচি, সর্দিজ্বর থেকে শুরু করে ইনফ্লুয়েঞ্জা, জলবসন্ত, ডায়রিয়া, জন্ডিস, সাইনাসে প্রদাহ, টনসিল ছাড়াও দেখা দিতে পারে কানের নানাবিধ সমস্যা। একটু বেশি যত্নই পারে তাদেরকে সুস্থ রাখতে। গরমের এই অসহ্য দিনগুলোতে অভিভাবকদের ওপরই শিশুর সুস্থ থাকাটা অনেকটাই নির্ভর করবে। তাই শিশুকে সুস্থ রাখতে অভিভাবক হিসেবে আপনাকেই সচেতন হতে হবে। বাবা-মায়ের সচেতনতায় বেড়ে ওঠে সুস্থ শিশু। শিশু অসুস্থ হলে বাবা-মায়ের দুশ্চিনৱার সীমা থাকে না। শিশুর সুস্থতা প্রতিটি বাবা-মায়ের কাম্য। তবে এজন্য প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন।

ঈদে মজার মজার খাবার

ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। আর সেটা যদি হয় কোরবানির ঈদ তাহলে তো কথাই নেই। ঈদের আনন্দ-উৎসবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে বাহারি পদের রান্না। এই রান্নার মধ্যে রয়েছে- গরুর মাংসের ভুনা, গরুর মাংসের কালিয়া, সাদা পোলাউ, মাটন কাচ্চি, খাসির মাংসের কোরমা, শিক কাবাব, মুরগির রোস্ট, শাহী রেজালা, নবাবী খিচুরি, শাহী মুরগির রেজালা, সবজির ফ্রাইড রাইস, গরুর সিনার মাংস ভুনা, খাসির মাংসের তেহারি, জালি কাবাব, ক্যাপসিকাম চিকেন কারি, সেমাই, পায়েস, নুডলস ইত্যাদি। মজার মজার রান্নাগুলো করার আগে অবশ্যই আপনাকে জিবানুমুক্ত হাতে রান্না করতে হবে সে ক্ষেত্রে মহিলারা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে পারেন। মেহমান অ্যাপায়ন বা পরিবারের সবাই মিলে মজাদার খাবার খাওয়ার আগে ও পরে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার কথাটা ভুলবেন না।

উৎসবে শিশুর খাবার

lifebouy-4ঈদ উৎসবে বিশেষ করে কোরবানির ঈদে খাবারের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। আর তাই শিশুদের খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে মায়েদের কাছে। শিশুরা খাবারের স্বাদের ব্যাপারে খুব খুতখুতে। খাবারের স্বাদ তারা খুব ভালো করে বুঝতে পারে। ঈদে শিশুদের ঝালবিহীন বিভিন্ন ধরনের নরম মাংসের খাবার এবং দুধের মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার খেতে দিন। সেই খাবার যদি ঘরে বানানো দুধের মিষ্টান্ন হয় তাহলে তো কথাই নেই। শিশুদের মজার মজার খাবারের মধ্যে রয়েছে পোলাউ, কোরমা, মুরগির রোস্ট, বিরিয়ানি, সবজির ফ্রাইড রাইস, লিভার ফ্রাই, খাসির গোসেৱর কোরমা, পাস্তা, সেমাই, ফালুদা, কাবাব, দুধ ও ছানার মিষ্টান্ন, ফিন্নি, রসমালাই, জর্দা, নুডলস, পায়েস, আইসক্রীম ইত্যাদি। খাওয়ার আগে ও পরে অবশ্যই শিশুকে লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে ভুলবেন না।

সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য

সুন্দর স্বাভাবিক জীবন এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়া নির্ভর করে অনেকটাই সুস্বাস্থ্যের ওপর। আর তাই সুষম খাদ্য, ব্যায়াম-এর পাশাপাশি নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাটা খুবই জরুরি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অর্থই কেবল পানি দিয়ে হাত ধোয়া নয়। এর জন্য দরকার কিছুটা বাড়তি সচেতনতা। এজন্য দরকার জীবাণু নাশক লিকুইড বা সাবান ব্যবহার করা। ছোট বড় সবারই বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া প্রয়োজন। তবে কেবল পানি দিয়ে হাত ধুলেই হবে না। এর জন্য দরকার সঠিক প্রক্রিয়া ও নিয়ম কানুন মেনে হাত ধোয়া। দুই হাতে সাবান লাগিয়ে এক হাতের ওপর আরেক হাত রেখে মোলায়েম ম্যাসাজ করলে হাত থেকে বাড়তি ধুলো, জমে থাকা বালিকনা ও জীবাণু দূর হয়ে যায়। আর হাতে ফুটে উঠে এক দীপ্তিময় সুগন্ধ। যা সহজে হাতে এনে দেয় সতেজতা। সঠিক উপায়ে হাত ধোয়ার ফলে বছরে লক্ষপ্রাণ শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে মুক্ত হতে পারে। আমাদের দেশে শিশু মৃত্যুর হারের বৃদ্ধির মূল কারণ ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া। যার বিস্তার ঘটে পানি থেকে। সঠিক উপায়ে সাবান ব্যবহারে এই রোগের বিস্তার কমে আসে। সুস্থ জীবন যাপন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় লাইফ বয় হতে পারে আদর্শ জীবাণু নাশক লিকুইড। সাবান দিয়ে হাত ধোয়াটা আমাদের জন্য অতি জরুরি। টয়লেট থেকে এসে খাবারের আগে ও পরে হাতে লিকুইড বা সাবান ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে বাড়িতে ছোট্ট শিশুদের খাবারের আগে ও পরে অবশ্য ভালো করে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। যাতে করে কোনো রোগই তাদেরকে আক্রমণ করতে না পারে। ছোটবেলা থেকেই রোগ থেকে মুক্তি পাবার সচেতনতাবোধ জাগাতে হবে। ফলে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিষয়টি তাদের অভ্যাসে পরিণত হবে। এ ক্ষেত্রে মা-বাবাকে সতর্ক থাকতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতন থাকলে শিশুরা অনেক রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

কদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই দিন সারাদেশে প্রচুর গবাদিপশু কোরবানি হবে। কোরবানি ঈদে আমাদের ঘর-বাড়ি, বাড়ির পাশের রাস্তা, কোরবানি দেয়ার স্থান-এবং সর্বোপরি নিজেদের পরিষ্কার রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কোরবানির পশুর রক্তের দাগ আর দুর্গন্ধ দূর করতে জায়গাটি ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এ ক্ষেত্রে এন্টিসেপটিক লিকুইয়েড মেশানো পানি ব্যবহার করলে একই সঙ্গে স্থানটিকে পরিষ্কার আর শতভাগ জীবাণু মুক্ত করা যাবে। কোরবানির পর যেখানে সেখানে পশুর বর্জ্য না ফেলে নির্বাচিত স্থানে ফেলুন। সম্ভব হলে নির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে রক্ত, বর্জ্য, মল ও অন্যান্য বর্জ্য মাটি চাপা দিন। বর্জ্যগুলো সরিয়ে নেয়ার পর জায়গাটি এন্টিসেপটি অর্থাৎ ডেটল অথবা সেভলন মিশ্রত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে বর্জ্যের দুর্গন্ধ দূর হবে এবং সেখানে মশা মাছির বিস্তার রোধে সাহায্য করবে। ফলে পরিবেশ থাকবে পরিচ্ছন্ন এবং দুর্গন্ধ মুক্ত। বর্জ্য, রক্ত, মল ও অন্যান্য বর্জ পরিষ্কার করার পর অবশ্যই লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। সারাদিনের সতেজতার জন্য প্রয়োজন একটি পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন গোসল। লাইফ বয় সাবান আপনাকে দিচ্ছে জীবাণুমুক্ত আত্মবিশ্বাসের নিশ্চয়তা। প্রতিদিনের মতো ঈদের সকালেও লাইফবয় সাবান হোক আপনার গোসলের সঙ্গী। কোরবানির মাংস কাটাকাটির কাজের শেষে লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

কোরবানি ঈদে কর্মমুখতায় হাত ধোয়ার প্রয়োজন হবে বারে বারে। লাইফ বয় এন্টিসেপটিক হ্যান্ডওয়াশ আপনার সঙ্গে থাকুক সব সময়। প্রতিদিন খাবারের আগে ও পরে। রান্নার সময় টয়লেটের পর এবং যে কোনো সময় হাত ধোয়ায় লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ অপ্রতিদ্বন্দ্বী। যা জীবাণুকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে। একই সঙ্গে আপনার ত্বকের যত্নে আপসহীন।

নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস

lifebouy-3আপনার শিশুকে খাওয়ার আগে ও পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে বলুন। এই অভ্যাসটি তাদের মধ্যে জাগাতে হবে। হাত ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে আমাদের নিজেদের যেমন অসুস্থতা দেখা দিতে পারে তেমনি আমাদের আশেপাশের মানুষের মাঝে জীবানুর সংক্রমণ বিস্তার লাভ করতে পারে। সময় নিয়ে এবং নিয়ম মেনে হাত ধুতে হবে। এটা শিশুদের শেখাবেন হাত ধোয়ার সময় আঙ্গুলের ফাঁকে, নখের নিচে এবং হাতের পিঠে ভালো করে ধুতে শেখাতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে ও পরে বা রান্নার সময় এবং টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই হাত ভালো ভাবে ধোয়ার পরামর্শ দিতে হবে। হাতকে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করার একমাত্র উপায় ভালো কোনো ব্যাকটেরিয়া নাশক সাবান ব্যবহার করা। ব্যাকটেরিয়ারোধী সাবান হিসেবে বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহার্য সাবান লাইফ বয়। আপনার শিশুকে নিয়মিত লাইফ বয় সাবান দিয়ে হাত ধোয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। আপনি নিজেও এই অভ্যাসটি রপ্ত করুন। শিশু সব সময় তার বাবা ও মাকে দেখেই শেখে। শিশুরা নিয়ম মেনে  হাত ধুলে অনাকাঙিক্ষত পেটের পীড়া থেকে মুক্ত থাকবে।

উৎসবে ঘরের সাজগোজ

ঈদে ঘরে সজীবতা, স্নিগ্ধতা আর বৈচিত্র্যময়তা আনতে আপনার সৃজন মনই যথেষ্ট। সাধ্যের মধ্য থেকে দেশীয় ঘরানায় সাজাতে পারেন আপনার অন্দর মহলটি। এক্ষেত্রে মাটির কিছু জিনিস আর কাঁচা ফুলই আনতে পারে অনেক বেশি বৈচিত্র্য। অন্দরের মূল ফটকের পাশেই রাখা যেতে পারে মাটির পানি ভরা পাত্র যেখানে রাখতে পারেন কিছু ফুল আর ভাসমান মোমবাতি। এই পাত্রের পাশে বেতের আয়না রাখলে কিন্তু মন্দ হয় না। বসার ঘরে যে কোনো একটি এলাকা নির্বাচন করে রাখতে পারেন ছোট অথবা বড় আকৃতির ফুলদানি। বসার ঘরের সোফা যদি অপেক্ষাকৃত নিচু কিংবা ফ্লোর সেটিং কুশন হয়, তবে পাশে রাখা যেতে পারে লম্বা মাটির কোনো পাত্র। আর এই পাত্রের মধ্যে রাখা যেতে পারে মানিপ্ল্যান্ট।

শোবার ঘর জুড়ে থাকুক স্নিগ্ধতা আর বর্ণিল সতেজতা। তাই বিছানার পাশের টেবিলে রাখতে পারেন নানা রঙেরফুল, গাদা ফুলের সঙ্গে লাল গোলাপ, ডালিয়া, গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা দিয়েও অন্দর মহল সাজানো যায়। কাঁচা ফুলের সঙ্গে কৃত্রিম ফুলের ব্যবহার অন্দরের সাজসজ্জার মধ্যে ভিন্নতা আনতে পারে। সন্ধ্যার পরে টেবিল ল্যাম্পের সঙ্গে হলুদ আর লাল কাপড় পেঁচিয়ে দিয়ে আলো জ্বালালে ঘর অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখায়। অন্দরের মনোরম সজ্জার জন্য বিছানার চাদর, জানালার পর্দা আর শতরঞ্জিতে আনতে পারেন বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। ডাইনিং টেবিলটা সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন। ঈদের দিন অতিথি আসবেই। তাই বিভিন্ন রকমের মজার মজার খাবার রান্না করা হয়। বেসিনের সামনে একটি লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ রেখে দিন। উৎসবের দিন অতিথিরা যেন  খাওয়ার আগে ও পরে ঠিকভাবে হাত ধুতে পারেন।

খেয়াল করুন শিশুর নখের দিকে

lifebouy-2গরমে ধুলোবালি থেকে নানা রকম রোগ বালাই ছড়াচ্ছে। শিশুর হুটহাট রোগ বালাই-এর অন্যতম একটি কারণ শিশুর বড় নখ। শিশুর নখ বড় হলে নখের ভেতরে নোংরা ঢুকে থাকে। আর নোংরা থেকেই শুরু হয় পাতলা পায়খানা এবং ডায়রিয়া। সুতরাং শিশুর নখ বড় হলো কি না অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের নখ খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়। কিন্তু তারা কখনোই বলবে না যে তাদের নখ বড় হয়েছে। সুতরাং অভিভাবক হিসেবে এই দায়িত্বটি আপনারই। নিয়মিত শিশুদের নখ পরীক্ষা করুন এবং নখ বড় হলে তা কেটে দিন। শিশুদেরকে প্রতিদিন নিয়মিত পাঁচ সময়ে লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ধুয়ে দেবেন। দেখবেন অসুখের প্রবণতা কমে গেছে।

শিশুর খেলনার প্রতি নজর দিন

অপরিষ্কার খেলনার মাধ্যমেই রোটা ভাইরাসের বিস্তার ঘটে। শিশুদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক হলো-রোটা ভাইরাসের আক্রমণ। রোটা ভাইরাসের আক্রমণে শিশুদের ডায়রিয়া হয়। বেশির ভাগ ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর কারণ হলো রোটা ভাইরাস। নিজের ব্যবহৃত খেলনার মাধ্যমে শিশুরা সবচেয়ে বেশি রোগাক্রান্ত হয়। সবকিছু মুখে পুরার একটা সহজাত স্বভাব থাকে শিশুদের। হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে দেয়। খেলতে খেলতে শিশুরা আনমনে খেলনা মুখে দিয়ে থাকে। বারণ করেও কোনো লাভ হয় না। আপনি নিষেধ করবেন আর শিশুরা দৌড়ে পালাবে। আড় চোখে আপনাকে দেখবে আর হাসতে হাসতে সেই খেলনাটিই মুখে দিবে। এটাও তাদের কাছে মজার একটা খেলা। আপনিও হয়তো নির্মল আনন্দ পান সনৱানের এই দুষ্টুমিতে। কিন্তু এই করতে করতেই শিশুরা ডায়রিয়া বাঁধিয়ে ফেলে। ডায়রিয়া শিশুর শরীরকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়। মৃত্যুও অস্বাভাবিক না। একবার ডায়রিয়া হলে সেই ডায়রিয়া কাটিয়ে উঠতে শিশুদের অনেক সময় লেগে যায়। শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি থেমে যায়। তাই নিজেই সতর্ক হোন। শিশুদের খেলনা নিয়ম করে সপ্তাহে একদিন ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার করার পর এন্টিসেপটিক দিয়ে ভালো করে জীবাণু মুক্ত করুন। খেলার পর শিশুর হাত অবশ্যই লাইফ বয় সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

শিশুদের খেলাধুলা

এখনকার শহরে শিশুরা খেলার সুযোগ পায় না। সারাদিন চার দেয়ালের মাঝে বন্দী থাকে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা অনেক। সপ্তাহের ৫/৬ দিন তাদেরকে স্কুলের পড়াশুনার জন্য প্রচণ্ড চাপে থাকতে হয়। শুধু স্কুল হলেও চলত, আছে প্রাইভেট ও কোচিংয়ের প্রেসার। তাদের খেলাধুলার জন্য একটু খানি সময় বের করুন। হোক সেটা ঈদের ছুটি বা সপ্তাহের ছুটির দিন। ছুটির দিনে শিশুকে নিয়ে যান খোলা মাঠে। তাকে খোলা মাঠে মুক্ত করে দিন। সনৱানকে উজ্জীবিত করতে তার খেলায় সঙ্গ দিন। হতে পারে ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা ব্যাডমিন্টন। আপনার  দেয়া অল্প কিছু সময় আপনার সনৱানকে দেবে অপার আনন্দ। চার দেয়ালের মাঝে নয় মুক্ত আকাশের নীচে বেড়ে উঠুক আমাদের শিশুরা।

রোগ বালাই থেকে নিরাপদ থাকুন

lifebouy-1রোদের তীব্রতা আর ধুলোবালির  প্রকোপে প্রাণ ওষ্ঠাগত। আপনার শিশুও নিরাপদ নয় এই বিভীষিকাময় অবস্থা থেকে। ধুলোবালির কারণে অ্যালার্জির আশঙ্কা থাকে, আবার অনেকের শ্বাসকষ্ট আছে বলেও ধুলোবালি এড়িয়ে চলেন। তবে শুধু বাইরের ধুলোবালি এড়িয়ে চললেই হবে না। ঘরের ভেতরও ধুলোবালি জমে। আর সে কারণে দেখা দিতে পারে নানা রকমের অসুখ। একাধারে ঘরে ও বাইরে ধুলোবালি এড়িয়ে চলতে পারলে শিশুর ধুলোবালিজনিত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করে চলা সম্ভব। ঘরের মেঝের সৌন্দর্য বর্ধক কাপের্ট বা ম্যাট প্রচুর ধুলোবালি ধরে রাখে যা নাক দিয়ে নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে হাঁপানি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ঘরের ভেতরে ধুলোবালি পরিষ্কার করতে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। শোবার ঘর প্রতিদিন মুছে জীবাণুমুক্ত স্প্রে ছিটিয়ে দিতে পারেন। ঘরের বই, পত্রিকা, কাগজেও ধুলোবালি জমে। এগুলোও ঝেড়ে মুছে রাখুন। যদি সম্ভব হয়, আপনার ঘরে মাইক্রোগ্রেড অ্যালার্জেন ফিল্টারের সঙ্গে এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ব্যবহার করুন। এটা নিয়ে সপ্তাহে একবার পরিষ্কার করাই যথেষ্ট। আর এসব মেনে চললেই ঘরের ধুলোবালি থেকে অর্থাৎ শ্বাস- প্রশ্বাসের রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে পারে আপনার শিশু ও আপনার পরিবার।

ঘরের পরিবেশের প্রতি গুরুত্ব দিন

ঈদে ঘরের আসা অতিথিরা কোথায় বসবে, ছোট ফ্ল্যাটের সাজ সজ্জাই বা কেমন হবে কিংবা রুমের পরিবেশ নিয়েও রয়েছে এক ধরনের দুশ্চিন্তা।

বাড়তি মেহমানদের বসার জন্য ড্রয়িং রুমের সোফাই যথেষ্ট নয়, সে জন্য কিছুটা জায়গা বের করে শতরঞ্জি কার্পেট বা শীতল পাটি দিয়ে ফ্লোরিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির কয়েকটি কুশন দিন।

বেড রুমে কিছু অতিথির বসার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। ফ্লোরিং করুন অথবা চেয়ার, মোড়া বা টুল রাখুন।

বাচ্চাদের পুরো ঘরটা কার্পেটিং করে তাতে কিছু কুশন, পুতুল ও খেলনা রাখুন। অতিথি শিশুরা এখানেই সময় কাটাতে পারবে।

ফ্ল্যাটের বারান্দায় কিছু চেয়ার, মোড়া, টুল দিয়ে বসার ব্যবস্থা করতে পারেন।

খাবার টেবিলে প্লাস্টিকের রানার ও ম্যাট ব্যবহার করুন। সহজে পরিষ্কার করা যাবে। টেবিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে চামচ, ছুরি ও টিস্যু রাখুন।

ওভেন প্রুফ বাটিতে ঈদের মজাদার খবার রাখুন। ঠাণ্ডা হলে চটজলদি গরম করা যাবে। খাবার রাখতে ঢাকনা   যুক্ত বাটি ব্যবহার করুন।

বেশিনে লাইফ বয় হ্যান্ডওয়াশ রাখুন। দু-তিন সেট  টাওয়াল রাখুন। প্রতিটি রুমে ময়লা রাখার ঝুড়ি রেখে দিন।

পানি জগে না দিয়ে জারে দিন। যেহেতু অনেক অতিথি, তাই পানি বেশি করে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে রাখুন। বিছানায় কালারফুল চাদর ব্যবহার করুন। ময়লা কম হবে। ঘরের পর্দা আগেই ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। বাথরুম পরিষ্কার এবং শুকনা রাখুন। ঘরের আয়নাগুলো পরিষ্কার কি না খেয়াল রাখুন।

ঘরের বিভিন্ন কর্ণারে ল্যাম্প শেড রাখুন। লোডশেডিংয়ের জন্য কিছু হাত পাখা রাখুন। বেশ কিছু মোমও রাখুন।

সম্ভব হলে সব রুমেই কিছু তাজা ফুল রাখুন। অতিথি আসার আগেই ঘরে এয়ারফ্রেশনার দিন। সু র‌্যাক থেকে নিজেদের জুতা সরিয়ে অতিথির জুতা রাখার ব্যবস্থা করুন। বসার ঘরে বেশ কিছু ম্যাগাজিন বা বই রাখুন। অতিথির জন্য ভালো কিছু মুভিও রাখতে পারেন। যে কোনো বিপদের কথা মাথায় রেখে ফাস্টএইড বক্স রাখুন।