Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ঈদের ছুটিতে চলুন ঘুরে আসি

ঈদের ছুটির সবচেয়ে বড় আয়োজন থাকে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাওয়া। দেশের ভিতর তো বটেই, দেশের বাইরেও ছোটেন অনেকে। ঈদ আনন্দ দ্বিগুণ করে দিতে পারে এই ভ্রমণ। ভ্রমণপ্রিয় মানুষ তাই মুখিয়ে থাকে ঈদের ছুটিতে কোথাও বেড়িয়ে আসতে। দেশের ভিতর বিভিন্ন পরিচিত জায়গা তো রয়েছেই, দেশের বাইরে ভ্রমণপ্রেমীদের পছন্দ নিকটবর্তী দেশগুলো। এই ঈদে একটু প্রস্তুতি থাকলেই বেরিয়ে আসতে পারেন যে সব জায়গা থেকে। লিখেছেন রাজু আলীম

মেঘে ঢাকা সাজেক

সম্পর্কিত

রাঙামাটির অনেকটা অংশই দেখা যায় সাজেক ভ্যালি থেকে। বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের সাজেকের পুরোটাই পাহাড়ে মোড়ানো পথ। ভৌগোলিক অবস্থান রাঙামাটিতে হলেও যাতায়াতের সহজ পথ খাগড়াছড়ি হয়ে। সাজেকের পাহাড়ে মেঘেদের মেলা বসে। পাহাড়ে মেঘের স্পর্শে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। মেঘে ঢাকা সাজেকের অপরূপ প্রকৃতি সবার মন জয় করে নেয় সহজেই।
যেভাবে যাবেন : প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা। রাজধানী থেকে শান্তি পরিবহন, বিআরটিসি এসি বাস, সেন্ট মার্টিন এসি বাস, শ্যামলী, সৌদিয়া, ঈগল, এস আলম পরিবহনে খাগড়াছড়ি এবং দিঘীনালায় সরাসরি যাওয়া যায়। ভাড়া ৫৮০ টাকা খাগড়াছড়ি, ৬০০ টাকা দিঘীনালা। চট্টগ্রাম থেকে প্রতি এক ঘণ্টা পরপর শান্তি পরিবহনের গাড়ি ছাড়ে, ভাড়া ১৯০ টাকা। তাছাড়া চট্টগ্রামের লোকাল বাসেও যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা থেকে ভাড়ায় চাঁদের গাড়ি, ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, সিএনজি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা অথবা মোটরবাইক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসতে পারবেন।
যেখানে থাকবেন : সাজেক এলাকায় থাকার ভালো জায়গা নেই। তাই রাতে থাকার জায়গা আগে থেকেই ঠিক করতে হবে। দল বড় হলে প্রস্তুতি নিতে হবে আগে থেকেই।
থাকার জন্য আছে রূনময় রিসোর্ট বিজিবি পরিচালিত, সাজেক রিসোর্ট সেনাবাহিনী পরিচালিত, আলোর রিসোর্ট এবং ক্লাব হাউস। সাজেকবাসী পরিচালিত কয়েকটি দোকানে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে সেক্ষেত্রে আগেই তাদের জানাতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য: সাজেক অনেক দুর্গম জায়গা। এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। যাও আছে তা মূলত সৌরবিদ্যুত নির্ভর। উঁচু জায়গা বলে এখানে পানীয় জলের বেশ সংকট। তাই খাওয়ার পানি সঙ্গে নেওয়া উচিত। আর হ্যাঁ, সাজেকের প্রকৃতি একটু ঠান্ডা বলে হালকা গরম কাপড় রাখা ভালো।

স্বচ্ছ পানির বিছানাকান্দি

সিলেট বিমানবন্দর রোড ধরে বিছানাকান্দির পথ। দুই পাশে সবুজ চা বাগান। আপনি সিএনজিতে বসেই দেখবেন ছবির মতো করে আঁকা মেঘালয়ের পাহাড়গুলো, পাহাড়ের গায়ে মাঝে মাঝে সাদা রেখার ঝরনাগুলো। বিছানাকান্দি, সীমান্তহীন মেঘনীল আকাশ এখানে বড় উদার, নিজেকে মেলে ধরেছে। সিলেটের বিছানাকান্দিতে বর্ষায় পানির ঢল নামে। এখানে ভারত থেকে আসা শীতল স্বচ্ছপানি পর্যটকদের মন কাড়ে।
যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সিলেটে আপনি ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। সিলেট শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে যেতে হবে হাদার বাজার, ভাড়া নেবে বড়জোর ৫০০ টাকা। সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেখানে প্রতি সিএনজিতে চারজন করে নেওয়া হয় হাদার বাজার পর্যন্ত। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মতো। হাদার বাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছানাকান্দি পর্যন্ত। ভাড়া নেবে ৪০০-৫০০ টাকা আপ ডাউন।
যেখানে থাকবেন: সিলেট শহরে এখন অনেক উন্নতমানের হোটেল গড়ে উঠেছে। বিছানাকান্দিতে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায় সিলেট শহর থেকে। তাই সিলেট শহরেই থাকতে পারেন। হোটেল হিল টাউন, ব্রিটানিয়া হোটেল, হোটেল দরগা ইন ছাড়াও অনেক ভালো হোটেল আছে।
সাবধানতা: বিছানাকান্দির পানিতে নামতে হলে আপনাকে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভারত থেকে আসা পানির ¯্রােতের বেগ এত বেশি ক্ষীপ্র থাকে যা স্বচ্ছ জলের জন্য ডাঙ্গায় থেকে পরিমাপ করা দুরূহ হয়ে পড়ে। এ জন্যই না বুঝে নেমে পড়লে প্রচন্ড গ্রোতের বেগ আর পাথরের ফাঁকে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।
নোট: বিছানাকান্দির পথেই আরেক পর্যটন স্পট রাতারগুল হয়ে যেতে পারেন। এখান থেকে রাতারগুল খুব বেশি দূরে নয়। একটু কষ্ট করলেই আর মিস করতে হবে না।

সমুদ্র কন্যা কক্সবাজার

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত। পাহাড়, সাগর, দ্বীপ, নদী ও সমতল ভ‚মির এক অপূর্ব মিলনমেলা এই কক্সবাজার। নয়নাভিরাম এ সমুদ্রসৈকতটি অসাধারণ কিছু বৈচিত্র্যে ভরপুর। রাস্তার একপাশে পাহাড় আর অন্যপাশে ঢেউ তোলা সমুদ্র। এর প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রসৈকত। জাঁকজমকপূর্ণ লাবণী বিচ, পাথরে ঘেরা ইনানী বিচ, রাতের আকর্ষণ সুগন্ধা বিচ। এখানে রয়েছে বিখ্যাত সব দর্শনীয় স্থান। কক্সবাজারের প্রাচীন ঐতিহ্য বলা হয় রামুকে। এখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বেশ কিছু কেয়াং ও প্যাগোডা রয়েছে। ডুলাহাজরায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। হিমছড়ি পাহাড়ের ওপর থেকে সাগরের নীলজল আর পুরো কক্সবাজারের ভিউ দেখতে পারবেন। হিমছড়িতে রয়েছে মনোমুঙ্কর একটি ঝরনা। কক্সবাজারের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সোনাদিয়া দ্বীপ। মহেশখালীতে বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির রয়েছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক জীব-জন্তুর মিউজিয়াম ও অসংখ্য ছোট মার্কেটও রয়েছে।
coxs-bazarকীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি বিমানে কক্সবাজার যেতে পারবেন। সরাসরি রেলের সুবিধা না থাকলেও রেলপথে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর বাসে করে যেতে হবে। এ ছাড়া বাসের সুবিধা তো আছেই। লাক্সারি এসব বাসের এসি, নন-এসি দুই ধরনের সার্ভিস রয়েছে।
কোথায় থাকবেন: বিশ্বের অন্যতম বড় সমুদ্রসৈকত আর নয়নাভিরাম কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট। ধরন অনুযায়ী এসব হোটেল ভাড়ার তারতম্য রয়েছে। অনলাইনেও এসব হোটেল বুকিং করতে পারবেন।
নীল পানির সেন্টমার্টিন
আচ্ছা ভাবুন তো! নীল পানির সমুদ্রসৈকত, শহুরে কোলাহল থেকে অনেক দূরে, যেখানে ছুটির দিনেও ট্যুরিস্টদের উপচে পড়া ভিড় নেই। তেমনি একটি প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। নারিকেলের দ্বীপ বা ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ নামে পরিচিত। আবার অনেকেই দারুচিনি নামে চেনেন। ভ্রমণবিলাসী মানুষের অন্যতম আকর্ষণ এই প্রবালদ্বীপ। একসময় এখানে শুধু ভিনদেশি পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। চারদিকে নীল জলরাশি পরিবেষ্টিত ও নীল আকাশ সমৃদ্ধ সেন্টমার্টিন দ্বীপটি বর্তমানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এক অপূর্ব সুন্দর পর্যটন এলাকা। কেয়া গাছের প্রাচুর্যে পূর্ণ সৈকতটি সাগরের নীল পানি আর প্রবালের জন্য বিখ্যাত। সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবালদ্বীপটির সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এখানকার সাগরের নিচের প্রাণিজগত আরও বৈচিত্র্যময়। এখানে দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত ছাড়াও রয়েছে গর্জন বাগান, ঐতিহাসিক মাথিনের ক‚প,

শাহপরীরদ্বীপ ও ছেঁড়াদ্বীপ

কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি বিমানে বা বাসে করে কক্সবাজার যেতে হবে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফে যেতে হবে। টেকনাফ থেকে জাহাজ, ট্রলার বা স্পিডবোটে করে সরাসরি সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন: একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে রাতে থাকার জন্য প্রাসাদ প্যারাডাইস, হোটেল প্রিন্স, হোটেল অবকাশ, শ্রাবণী বিলাস, প্রিন্স হেভেন, বøু মেরিন, সি-ভিউসহ আরও অনেক উন্নতমানের কটেজ রয়েছে।

চা-এর রাজ্য শ্রীমঙ্গল

সিলেটের পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজারের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান শ্রীমঙ্গল। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ, যা দেখতে অপরূপ সুন্দর। পাহাড় আর সবুজের সমারোহে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা শ্রীমঙ্গল। চা বাগান, লেক, হাওর, উঁচু-নিচু পাহাড়, বন-জঙ্গল, আর রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর একটি পর্যটন স্থান। ‘চা-কন্যা’ থেকে শ্রীমঙ্গল শহরের দূরত্ব বেশি নয়। চা বাগানের এক অদ্ভুত পরিবেশ। চা গাছগুলো দেখতে কখনো সাগরের ঢেউ আবার কখনোবা বিশাল সবুজ মাঠ। সঙ্গে রংবেরঙের পাখির কলতানে মুখরিত শ্রীমঙ্গল একটি শরুতিমধুর এলাকা। বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, লাউয়াছড়া উদ্যান, মাগুরছড়া গ্যাসক‚প, পানপুঞ্জি, ওফিং হিল, এক মাত্র ঝরনা যজ্ঞ কুÐের ধারা, নিমাই শিববাড়ী, ‘চা-কন্যা’র ভাস্কর্য, আদিবাসী পল্লীসহ অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এখানে। যান্ত্রিক শহর থেকে নিজেকে একটু আড়াল করতে সবুজ বনানী পাহাড়-লেক, জলধারা ও চা বাগান ঘেরা মনোরম প্রকৃতির শ্রীমঙ্গল থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারবেন। রাতের ট্রেনে গেলে মধ্যরাতে আপনাকে নামতে হবে শ্রীমঙ্গল। সিএনজি কিংবা জিপের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভোর হওয়া পর্যন্ত। শ্রীমঙ্গল থেকে সরাসরি সিএনজি বা জিপ গাড়িতে করে আপনার গন্তব্যে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন: পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গল ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত থাকে। এখানে পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ প্রায় ৩০টি রিসোর্ট রয়েছে। এ ছাড়াও শহরে আধুনিক মানের ১৫টি হোটেল রয়েছে।

সবুজে ঘেরা বান্দরবান

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পাহাড়ি সবুজের সমারোহ আর মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা কার না থাকে! এ জন্য বান্দরবানের জুড়ি নেই। নীলগিরিতে মেঘের সঙ্গে খেলা করার অপূর্ব সুযোগ রয়েছে। নীলগিরি পাহাড়ের উপরে আপনাকে মেঘ ছুঁয়ে যাবে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মন্দির বা প্যাগোডা ঐতিহাসিক স্বর্ণমন্দির। সুউচ্চ পাহাড়ের চ‚ড়ায় তৈরি সুদৃশ্য এই স্বর্ণমন্দিরটি আসলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র তীর্থস্থান। পাহাড়ের খাদে কৃত্রিম হ্রদ, শিশুপার্ক, নৌকা ভ্রমণ, ঝুলন্ত সেতু ও চিড়িয়াখানা নিয়ে মেঘলার অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পড়ার মতো। পাহাড়ের ওপর নির্মিত নীলাচল ও শুভ্রনীলা থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য অপরূপ। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে। পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে ভেসে যাওয়া মেঘের ভেলা দেখতে পাবেন। শৈলপ্রপাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। কেওক্রাডংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে সুউচ্চ বড় পাহাড়গুলো ঠিক আপনার পায়ের নিচে মনে হবে। জাদিপাই ঝরনা অরণ্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে বিস্ময়! পাহাড়কে ক্রমাগত ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গায়ে রংধনু এঁকে দিচ্ছে জাদিপাই ঝরনা। আধখানা চাঁদের আকৃতি নিয়ে রিমঝিম শব্দে সারাটা এলাকা মাতিয়ে রেখেছে যে ঝরনা, তার নাম চিংড়ি ঝরনা। এ ছাড়া বান্দরবানের বগালেক, রিঝুক ঝরনা ও মিলনছড়িসহ আরও বেশ কয়েকটি দেখার মতো স্থান রয়েছে। বগালেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুরন্ত সবুজ পাহাড়ের দেয়াল। বান্দরবানের পাহাড়ে মন নাচে আহারে! কথাটি মনে বাজবে যদি আপনি একবার ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি বান্দরবান যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম হয়ে বান্দরবান যেতে দেশের যে কোনো এলাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম যেতে হবে। সেখানের বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে বাসে করে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন: বান্দরবান সদরে বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে। হোটেল ফোর স্টার, হোটেল গ্রিন হিল, হোটেল হিল বার্ডসহ আরও অনেক উন্নতমানের হোটেল রয়েছে। নাগরিক ব্যস্ত জীবনে অবকাশ যাপন প্রায় কঠিন। তাই ঈদের সময় কয়েক দিনের ছুটি পাওয়ায় অনেকেই বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণে। এবারের ঈদে পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বেড়াতে যেতে পারেন এমন কিছু জায়গায়…

অপরূপ কুয়াকাটা

অনেকেই আছেন সমুদ্র দেখতে শুধু কক্সবাজারেই ছোটেন। কুয়াকাটার সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্যও কিন্তু কোনো অংশে কম নয়। ১৮ কিমি দৈর্ঘ্যরে এই সৈকতটি পৃথিবীর অন্যতম একটি আকর্ষণীয় স্থান। কারণ এটিই পৃথিবীর একমাত্র স্থান যেখানে একই সঙ্গে আপনি দেখতে পারবেন সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয়। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময় প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য মিলেমিশে এক হয়ে যায়, সূর্যটাকে তখন শত কোটি দূরে বলে মনে হয় না। এছাড়াও সমুদ্রের পশ্চিম দিক থেকে শুরু হয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। এই বনের নাম ফাতরার বন। বিভিন্ন গাছের মধ্যে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, গোলপাতা ও ফাতরা গাছ। এছাড়া রয়েছে বিচিত্র সব জীবজন্তু। কুয়াকাটায় রাখাইনদের বিশাল একটি গোষ্ঠী বসবাস করেন। কুয়াকাটা ভ্রমণে আপনি চলে যেতে পারেন রাখাইন জীবনাচরণের খুব কাছাকাছি। সৈকত থেকে ৮ কিমি দূরে আমখোলাপাড়ায় এদের সবচেয়ে বড় বসতি। এদের বাসস্থান মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে উপমহাদেশের সবচাইতে বড় বৌদ্ধ মন্দির। সমুদ্রসৈকত পূর্ব দিকে শেষ হয়েছে গংগামতির খালে। এখানেই শুরু হয়েছে গংগামতির বা গজমতির বন। এখানে আপনার চোখে পড়বে বিরল প্রজাতির বনমোরগ। সবমিলিয়ে আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতই পারবে আপনাকে প্রকৃতির খুব কাছাকাছি নিয়ে যেতে।
যেভাবে যাবেন: সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী, তারপর বাসে করে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সরাসরি বাসও রয়েছে। সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী লঞ্চ ভাড়া, ১ম শ্রেণির কেবিনে ৮৫০-১০০০ টাকা। এছাড়া গাবতলী থেকেও কুয়াকাটা রুটের সরাসরি বাস যায়।
থাকার ব্যবস্থা: কুয়াকাটায় এখন অনেক ভালো মানের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল হলিডে হোমস, স্কাই প্যালেস, হোটেল গোল্ডেন প্যালেস, হোটেল নীলাঞ্জনা, হোটেল সাগর কন্যা উল্লেখযোগ্য।

মানিকগঞ্জ ও সাভারে দিনব্যাপী ভ্রমণ

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুুরিয়া উপজেলার বালিয়াতি গ্রামে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক ভবনটি প্রায় ২০০ বছর পুরাতন। ১৬০০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত সুবিশাল এই জমিদারবাড়িটিতে প্রায় ২০০টি কক্ষ রয়েছে। রাজধানী থেকে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জমিদারবাড়িটি দেশের অন্যতম ঐতিহ্যময় স্থান। এই ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন এখানেও। সেই সঙ্গে ধামরাইয়ের কাসাইয়ের গ্রাম্রে যেতে পারেন। প্রায় ৫০০০ বছরের পুরাতন ঐতিহ্যকে ধারণ করে ধামরাইয়ের প্রায় ৩০টি গ্রামে আজও টিকে আছে ধাতবশিল্প পল্লী। এখানে ধাতব শিল্পীরা ধাতু দিয়ে অপূর্ব কাঠামো (বিশেষ করে বিভিন্ন কাল্পনিক চরিত্রের প্রতিমা) নির্মাণ করে থাকে। ধাতবশিল্প পল্লীতে কিছু গ্রাম দুর্গম স্থানে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টির সময় সেখানে পৌঁছাতে আপনার নৌকার সহায়তা নিতে হতে পারে। ঢাকার কেন্দ্র থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটার দূরে সাভারের নবীনগরে আছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এখানেও যেতে পারেন সবাই মিলে।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

sAFARI-PARKঈদে যারা দূরে যেতে পারবেন না তারা এই লম্বা ছুটির একদিন দলবেঁধে যেতে পারেন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। গাজীপুরে অবস্থিত এই পার্কটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সমৃদ্ধ সাফারি পার্ক। পার্কের ঢুকতেই দেখা যাবে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। পার্ক সম্বন্ধে যেকোনো তথ্য জানার জন্য এখানে রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্র। পার্ক অফিসও আছে। জীববিজ্ঞানের নানা তথ্য ও গবেষণার জন্য রয়েছে ন্যাচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম। এই মিউজিয়ামে প্রায় দুই হাজার প্রজাতির মেরুদÐী ও অমেরুদÐী প্রাণীর দেহাবশেষ, স্পেসিমেন ও স্টাফিং সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। সাফারি পার্কের এক হাজার ৩৩৫ একর এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কোর সাফারি পার্ক। এখানে বন্য পরিবেশে বন্যপ্রাণীরা স্বাধীনভাবে বিচরণ করে। পার্কের গাড়িতে চড়ে বেষ্টনীর ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পারেন বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, আফ্রিকান চিতা, চিত্রা হরিণ, সাম্বার ও গয়াল, হাতি, জলহস্তী, নীল গাই, বারো সিংগা, বন্য মোষ।

সোনারগাঁ ও পানামনগর

পানাম নগর স্থাপন করেছিলেন বাংলায় বাণিজ্য করতে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ২.৫ কিলোমিটার উত্তরে মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত পানামনগর বর্তমানে একটি পরিত্যক্ত শহর। বলা হয়ে থাকে ১৩শ’ শতকের সপ্তম দশকে সোনারগাঁর হিন্দু রাজধানী ছিল পানামনগর। এখানে আপনি দেখতে পাবেন লাল ইট দিয়ে নির্মিত চমৎকার দোতলা বাড়ি। এছাড়া সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘরে রয়েছে বেশকিছু অদ্বিতীয় সংগ্রহ যেগুলো আপনি অন্য কোথাও দেখতে পাবেন না কেননা এসব সংগ্রহের বেশির ভাগ এদেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। বাংলার শাসক ঈশা খাঁ জাদুঘরের মূল ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে সপ্তাহে ছয় দিন সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর উন্মুক্ত থাকে। সোনারগাঁর কয়েকটি বিচ্ছিন্ন চর এলাকাও ঘুরে দেখতে পারেন এ সময়। মেঘনা নদীতে অবস্থিত নুনেরটেক অথবা গুচ্ছগ্রামে রয়েছে বেশকিছু বিচ্ছিন্ন চর। এখানে যেতে পারলে গ্রাম্য জীবনযাত্রা দেখে বিমোহিত হবেন। তবে শুধু নৌকায় করে মেঘনা নদী অতিক্রম করেই এখানে পৌঁছানো যায়।

লাক্সারি রিসোর্ট দ্য প্যালেস

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার এই রিসোর্ট চা বাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সর্বোচ্চ সুবিধা রেখে বানানো। প্রকৃতিকে বিরক্ত না করতে মাটির নিচ দিয়ে তার টানা হয়েছে, কোনো টিলা কাটা হয়নি। টিলাগুলোতে ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা আছে। অতিথিরা রিসোর্টের দুটি হ্রদে মাছ ধরতে পারেন। থাকার জন্য টাওয়ার ভবনে এক্সিকিউটিভ কিং, সিগনেচার কিং এবং সিগনেচার টুইন রুম ছাড়াও আছে এক বেডরুম ভিলা, The-Placeহানিমুন ভিলা, দুই বেডরুম ভিলা, তিন বেডরুম ভিলা ও প্রেসিডেন্সিয়াল ভিলা। খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে সায়গন (ভিয়েতনামের কুইজিন), অলিভ (মিক্সড ইন্ডিয়ান, কন্টিনেন্টাল ও ওরিয়েন্টাল কুইজিন), রিভলেশন, অ্যারাবিয়ান লাউঞ্জ ও নস্টালজিয়া (স্ট্রিট ফুড থিম)। আছে অ্যাম্ফিথিয়েটার, সিনেপ্লেক্স, মেইজ ও সুইমিং পুল। আছে ব্যাংকুয়েট হল ও মিটিং রুম। সব ধরনের খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে।
খরচ কেমন: টাওয়ার ভবনের বিভিন্ন রুমে থাকতে দিনপ্রতি গুনতে হয় ১২ হাজার ৫০০ থেকে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। বিভিন্ন ভিলায় থাকার খরচ ১৮ হাজার ২০০ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
যেতে চাইলে: ঢাকা থেকে বিমানে সিলেট, বাসে-ট্রেনে সিলেট এবং শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের এই রিসোর্টে যাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানবন্দর থেকে রিসোর্টে আসার ব্যবস্থা আছে।

হিমালয়কন্যা নেপাল

নেপাল শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, বিশ্বের অনিন্দ্য সুন্দর এবং আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। নেপালের ভ‚-প্রকৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। নেপাল অনেকটা স্যান্ডউইচের মতো চীন এবং ভারতের মাঝখানে অবস্থান করছে। নেপাল এবং চীনের সীমান্তজুড়ে যেসব অঞ্চল রয়েছে সেসব জায়গায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ ১০টি পর্বতের আটটি অবস্থিত। এখানে রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। নেপাল আরও এক কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মনে করা হয় নেপালের লুম্বিনিতে জন্মেছিলেন বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ। নেপালের সংস্কৃতিও দেশটির মতো বৈচিত্র্যময়। তাছাড়া নানা রকম মুখরোচক খাবার আর শপিং করার জন্য থামেল বিখ্যাত। রাজধানী কাঠমান্ডুর কুমারীঘর, ষোড়শ শতাব্দীর রাজলক্ষী নরসিংহ মল্লের প্রাসাদ, বসন্তপুর দরবার স্কয়ার, বড়া নীলকণ্ঠ, শিবপুরী পাহাড় রয়েছে। নেপালে যাবেন আর পাহাড়ে উঠবেন না তাই কী হয়! আপনি যদি পেশাদার পর্বতারোহী না হন তাহলে ছোটখাটো পাহাড়ে বেড়িয়ে আসতে পারবেন।
যেভাবে যাবেন: নেপাল সরাসরি বিমানে যেতে পারেন। এতে আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এ ছাড়া সড়কপথে শিলিগুড়ি থেকে কাঁকরভিটা হয়ে নেপালে যাওয়া যায়। কিন্তু সড়কপথে যেতে হলে নেপাল এবং ভারতের ভিসা নিতে হবে। তবে এ পথেও নেপালের কোনো ভিসা ফি নেই।
যেখানে থাকবেন: কাঠমান্ডুর থামেল এলাকায় ট্যুরিস্টদের জন্য অনেক হোটেল রয়েছে। থামেলের রাস্তার অলিতে-গলিতে হোটেল পাবেন। হোটেলের খরচ বাংলাদেশের চেয়ে সস্তা। কাঠমান্ডুতে বিদ্যুৎ সংকট রয়েছে। তাই দেখে নেবেন হোটেলে জেনারেটর সুবিধা আছে কিনা। নেপালে খাবার খরচ আমাদের দেশের তুলনায় সস্তা। কাঠমান্ডুর রাস্তায় অসংখ্য খাবারের দোকান মিলবে। দেশি-বিদেশি অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে এখানে।

চলো যাই কাশ্মীর

ঈদের ছুটিতে অনেকে দেশের বাইরেও যেতে পছন্দ করেন। খুব দূরে যেতে না পারলে ঘুরে আসতে পারেন পাশের দেশ ভারতের কাশ্মীর থেকেও। পৃথিবী ভূস্বর্গ নামে খ্যাত কাশ্মীরে আবহাওয়া ও ভৌগোলিক দিক থেকে মৌসুম চারটি। গ্রীষ্ম (জুন, জুলাই, আগস্ট), শরৎ (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর), শীত (ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রæয়ারি) ও বসন্ত (মার্চ, এপ্রিল, মে)। চার মৌসুমে কাশ্মীরের চার রূপ। তবে শীতে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে রাখতে হবে বাড়তি প্রস্তুতি। এই ঈদে যেতে পারেন কাশ্মীরেও।
kashmir-tour-packagesযেভাবে যাবেন: কাশ্মীর যেতে হলে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক বিমানে প্রথম যেতে হবে দিল্লি ইন্ধিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অথবা ঢাকা থেকে কলকাতা হয়েও যাওয়া যায়। সেখান থেকে ডোমেস্টিক বিমানে জম্মু অথবা শ্রীনগর বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে। কলকাতা থেকে সরাসরি শ্রীনগরে কোনো ফ্লাইট নেই। তাই দিল্লি হয়ে যেতে হয়। তবে ঢাকা-কলকাতা-দিল্লি-শ্রীনগর এভাবে ভেঙে ভেঙে গেলে খরচ কম হয় তুলনামূলকভাবে। শ্রীনগর বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই জানালা দিয়ে চোখে পড়বে পর্বতের চূড়ায় চিকচিক করা সাদা তুষার। মনে হবে যেন অগণিত টিনের চালে রৌদ্রের বিকিরণ। কলকাতা বা দিল্লি থেকে বাস বা ট্রেনযোগে যাওয়া যায়। কলকাতার ট্রেন ৪১-৪৫ ঘণ্টায় আপনাকে নামিয়ে দিতে পারে জম্মুতে। জম্মু থেকে মাত্র ২৫ মিনিট বিমানে উড়ে যেতে পারেন শ্রীনগর। সেখানে দেখবেন আরো নিকট থেকে তুষারের মুকুট পরানো পর্বতরাজি। পর্বতের গায়ে তুষারের আচ্ছাদন আর তুলার বলের মতো মেঘের মধ্যে কোলাকুলি-গলাগলি দেখতে পাবেন। এখন কাশ্মীরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ টুরও আছে।
সাধারণত, বিভিন্ন প্যাকেজের অধীনে পর্যটকদের নেওয়া হয়, পেহেলগাম, গুলমার্গ, সোনোমার্গ আর শ্রীনগরের ডাল লেকের চারপাশে অবস্থিত মোগল গার্ডেন, হজরতবাল মসজিদÑএসব জায়গায়। কিন্তু এসবের বাইরে দুধপত্রী, কোকরনাগ, ডাকসুম কিংবা সিনথেনটপের সৌন্দর্য আরো মুগ্ধকর। আহারবালের জলপ্রপাতটিও অসম্ভব সুন্দর। কাশ্মীর ইউনিভার্সিটিও দেখার মতো।

ভূস্বর্গ ভুটান

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভুটান। দেশটির উত্তরে চীনের তিব্বত এবং দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারত। ভুটান সরকারের মূল মন্ত্র হচ্ছে গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস। ভুটানের সব থেকে আকর্ষণীয় স্থান থিম্পু। এই স্থানটি দেশের সংস্কৃতির মূল কেন্দ্র। এখানে রয়েছে সিমতোখা জং, থিম্পুর প্রাণ থিম্পু জং। থিম্পুর পুনাখা শহর থেকে হিমালয় দেখা যায়। পুনাখা জং, ফো ছু এবং মো ছু নদীও দেখতে পাবেন পুনাখায়। প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থাপনার সা¤্রাজ্য ভুটানে আরও অজ¯্র দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বুমথাংকে বলা হয় ভুটানের আধ্যাত্মিক হৃদয়ভূমি। কারণ, ভুটানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জং মন্দির এবং মহল এই অঞ্চলে অবস্থিত। আরও দেখা যাবে, ওয়াংগডিচোলিং প্যালেস, জাম্বে লাখাং মন্দির, সব থেকে বড় ভুটানিজ মন্দির জাকার এবং হট স্প্রিং এরিয়া। এই এলাকায় বন্টু শিপ, মাস্ক ডিয়ার, হিমালয়ান ভাল্লুক এর দেখাও মিলতে পারে।
কীভাবে যাবেন : প্লেনে যাওয়া ভালো। এখানে কেনাকাটায় দাম অনেক চড়া। খরচ কমাতে চাইলে বাসে যাওয়াই ভালো। রাস্তা খুব ভালো, তবে দীর্ঘ জার্নি, যা মেয়ে ও বুড়োদের জন্য সমস্যা হতে পারে। ইন্ডিয়ার ভিসা নিতে হবে। শুধু ট্রানজিট ভিসা। ভুটানের ভিসা বর্ডার অথবা এয়ারপোর্ট থেকে নিতে হয়, পাসপোর্টে সিল মেরে দেবে, ওটাই ভিসা। ক্রেডিট কার্ড না থাকলে পাসপোর্টে ডলার এনডোর্স করতে হবে ব্যাংক থেকে ইন্ডিয়ার ভিসার অ্যাপ্লিকেশনের জন্য। বুড়িমারী-চেংরাবান্ধা বর্ডার থেকে ডলার ভাঙিয়ে রুপি করে নিতে পারবেন। ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি ওদের নিজস্ব মুদ্রার মতোই চলে, একই মান।
কোথায় থাকবেন : ভুটানে পর্যটকদের জন্য অনেক হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। ফুয়েনশলিংয়ে থ্রি-স্টার মানের হোটেলও আছে। রাতটা ওখানে থেকে সকালে বাসে থিম্পুর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।