Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আসছে শীতে ঠোঁটের যত্ন

মৌসুমের বৈশিষ্ট্যগুলো এখন আর ঠিকঠাক নেই।  এক ঋতুতে আরেক ঋতুর বৈশিষ্ট্য মানুষকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।  বৈশ্বয়িক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বিষয়গুলো ঘটছে।  তবে এখন যে শীত এসে যাচ্ছে সেটা বোঝার জন্য মৌসুম বা মাসের  হিসেব না করলেও চলে।  সবে হেমন্ত শুরু হল।  উত্তরের ঠা া বাতাস বইতে শুরু করেছে। হুট করে সকাল কিংবা বিকেলের দিকে এই বাতাস শরীরে কাঁপুনি দিয়ে দিচ্ছে।  শীত অনেকেরই খুব প্রিয় ঋতু।  শীতের  খারাপ দিকগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে শীত সবার কাছেই হয়ে উঠবে আদরণীয়।  শীতের প্রধান সমস্যা ঠোঁট ফাটা।  ঠোঁট ফাটার কারণ হচ্ছে ঠোঁট ও শরীরে আর্দ্রতার অভাব।  শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে বলে ঠোঁট আর্দ্রতা হারায় খুব তাড়াতাড়ি।  শীতের শুষ্ক ও ঠা া বাতাসে ঠোঁট বারবার ফেটে যায়।  কখনো কখনো এতটাই ফেটে যায় যে চামড়া উঠে আসে ও রক্ত বের হয়।  তাই প্রয়োজন ঠোঁটের যত্ন নেওয়া।  মনে রাখতে হবে কখনোই জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানো উচিত নয়।  কুসুম কুসুম গরম পানিতে পরিষ্কার একটি কাপড় ভিজিয়ে নিয়ে ঠোঁটে হালকা করে তিন-চারবার চাপ দিন।  তারপর ভেসলিন বা গ্লিসারিন পাতলা করে লাগিয়ে নিন।  ঠোঁটের জন্য ভালো কোনো প্রসাধনী ব্যাগে রাখুন এবং দিনে তিন-চারবার লাগাতে পারেন।  এছাড়া ঠোঁটের যত্নে আর কী কী করা যেতে পারে দেখে নিন।

ঠোঁট ভেজাবেন না, এভাবে ঠোঁট ভেজালে আপনার ঠোঁট আরও বেশি ফাটবে। কঠিন।  চেষ্টা করুণ ফাটা ঠোঁটকে যতটা সম্ভব আর্দ্র রাখতে।  ঠোঁট ফাটা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত শুষ্ক বাতাস থেকে ঠোঁটকে সুরক্ষিত রাখুন অবশ্যই।  ফাটা ঠোঁটে কখনো কখনো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে, তাই ঠোঁট ফাটার ব্যাপারে হতে হবে সচেতন।

* নিয়মিত ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।

* শীতকালে পানি যেমন কম খাওয়া হয়, মুখও কম ধোয়া হয়।  তাই হয়তো কথা বলার সময় অনুভব করেন, আপনার ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে।  যখনই এমন অনুভব করবেন, তখনই ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।

* বাইরে বেরোলে সঙ্গে লিপবাম বা লিপবাটার রাখতে পারেন।  শীতে বাইরে গেলে ঠোঁট বেশি ফাটে এবং ঠোঁটে ধুলাও লেগে যায়।  তাই তখন মাঝেমধ্যে ঠোঁট একটু ধুয়ে নিয়ে লিপবাম বা লিপবাটার লাগিয়ে নিন।  ঠোঁট ধোয়ার সুযোগ না পেলে প্রথমে একটু লিপবাম লাগিয়ে সেটি মুছে ফেলুন।  এতে আপনার ঠোঁট পরিষ্কার হবে।  তারপর আবার লিপবাম লাগান।

* প্রচুর পানি পান করুণ।

Popi* শুষ্ক ঠা া থেকে দূরে থাকুন।  প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বেরোবেন না, বিশেষ করে যখন ঠা া বাতাস থাকে অথবা খুব তীব্র শীত পড়ে, তখন ঘরেই থাকতে চেষ্টা করুন।

* ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁটকাঠির রঙের প্রলেপ তুলে ফেলুন।  একটুখানি দুধ-মালাই দিয়ে ঠোঁট দুটো আলতোভাবে ম্যাসাজ করুণ।  সামান্য কিছুক্ষণ এমন ম্যাসাজে ঠোঁটে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং দুধ-মালাই থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে আপনার ঠোঁট।  সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন আপনার ঠোঁট শীতের ঠান্ডা মোকাবিলায় প্রস্তুত।

* বাইরে গেলে মুখের উপরিভাগে স্কার্ফ বা কোনো কাপড় ব্যবহার করতে পারেন; যাতে এটি আপনার ঠোঁটকে শীতের হাওয়া থেকে আড়াল করে রাখে।

* সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ঠোঁটকে বাঁচাতে লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন।  এসপিএফ ১৫ বা তার বেশি এমন লিপবাম ব্যবহার করুন।

* লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজারযুক্ত লিপস্টিক বেছে নিন।

* যদি ম্যাট লিপস্টিক লাগাতেই চান, সে ক্ষেত্রে সম্ভব হলে প্রথমে তুলা বা টিস্যুর সাহায্যে সামান্য একটু লিপবাম ঠোঁটে লাগিয়ে নিন এবং তারপর লিপস্টিক লাগান।

* শীতে অনেকের ঠোঁট কালো হয়ে যায় এবং খুব বেশি ফেটে যায়।  তারা ঘরোয়া পদ্ধতিতেই নিতে পারেন বাড়তি যত্ন।  গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে মধু বা মাখন মিশিয়ে ঠোঁটে সারা রাত লাগিয়ে রাখুন।  বিট-রুটের রসের সঙ্গেও গোলাপের পাপড়ি ও মধু মিশিয়ে সারা রাত ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে পারেন।

* একটি আর্দ্রতাকারক যন্ত্র (হিউমিডিফায়ার) কিনতে পারেন; কারণ, শীতে ঘরের ভেতরটাও শুষ্ক থাকে।  হিউমিডিফায়ার আপনার ঘরের আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেবে।

ঠোঁটের যত্নে কিছু উপকারী প্যাক আছে।  আপনারা চাইলে সেই প্যাকগুলো ব্যবহার করতে পারেন।  দুটো প্যাক বিষয়ে জেনে নিন।

গোলাপ-মধুর লিপ-প্যাক

শীতে ঠোঁটের যত্নে ঘরে বসে নিজেই নিজের জন্য তৈরি করে নিতে পারেন সাশ্রয়ী লিপ-প্যাক।  কিছু গোলাপের পাপড়ি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে নিন।  এবার পাপড়িগুলো ভালো করে চটকে নিয়ে সঙ্গে খানিকটা মধু মিশিয়ে একটা ম  তৈরি করে ফেলুন।  ম  তৈরি হয়ে গেলে তা আলতো করে ওপরের ও নিচের ঠোঁটে মাখুন।  ঠোঁটের ওপর ম টা শুকিয়ে যেতে ধরলে পানি দিয়ে করলে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।  মধু ঠোঁটকে পুষ্টি জোগাবে এবং গোলাপ পাপড়ির রস কোমল ঠোঁট দুটোকে গোলাপি আভায় রাঙিয়ে তুলবে।

সরষে-ঘিতে ঠোঁটের যত্ন 

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাতের তালুতে একটু সরিষার তেলের সঙ্গে সামান্য একটু ঘি নিয়ে আঙুলে ডগায় করে আলতোভাবে ঠোঁটে মেখে রাখুন।  সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজতে আয়নার সামনে দাঁড়ালেই টের পাবেন ঠোঁটের যত্নের সুফল।