Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বিপিএল ২০১৫ কী মধুর থিম সং!

মোহাম্মদ তারেক: ক্রিকেটকে ঘিরে সব সময়ই মানুষের মধ্যে অন্যরকম একটা উম্মাদনা কাজ করে।  এদিক থেকে পিছিয়ে নেই আমাদের দেশও।  ক্রিকেট উম্মাদনাকে বাড়িয়ে দিতে সংগীত একটি বড় ভূমিকা রেখে আসছে।  বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জেতার পর প্রথমবারের বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ক্রিকেট নিয়ে গান করার ধারা শুরু হয়।  ‘গুডলাক বাংলাদেশ গুডলাক’ এ গানটির মধ্য দিয়ে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী শুভ্রদেব এ ধারার সূচনা করেন।  পরে আসিফ আকবরের কণ্ঠে ‘বেশ বেশ বেশ সাবাস বাংলাদেশ’, ফুয়োদের সুরে একাধিক সংগীত শিল্পীর গাওয়া ‘চার ছক্কা হই হই’, বলগড়াইয়া গেল কই’, আরফিন রুমির ‘জ্বলে উঠো বাংলাদেশ’, বাপ্পা মজুমদারের ‘ষোলকোটি প্রাণ, একটাই গান বাংলাদেশ’, হাবিব ওয়াহিদের ‘এগিয়ে যাবে আমার সোনার বাংলাদেশ, এফ এ সুমনের গাওয়া ‘মার ছক্কা মার চার’, বাপ্পা মজুমদারে ‘ধুম ধাড়াক্কা মারবে ছক্কা’ এসব গানগুলো ক্রিকেট উম্মাদনা ও ক্রিকেটারদের উৎসাহ বাড়াতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।  এছাড়া অনেক তারকা শিল্পীদের কণ্ঠেও ক্রিকেট নিয়ে গান প্রকাশিত হয়েছে।  আগামী ২২ নভেম্বর শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)।  তৃতীয় আসরকে কেন্দ্র করেও যেন বাংলাদেশের মানুষেরও উম্মাদনার শেষ নেই।  বিপিএলের এবারের আসরের থিম সং-এ কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ।  এই গানে তিনি শুধু একা নন, আছেন এ সময়ের আরও তিনজন জনপ্রিয় গায়িকা।  তারা হলেন কনা, কোনাল ও লিজা।  গানটিতে আরও কণ্ঠ দিয়েছেন থিম সংয়ের সুরকারও সংগীত পরিচালক তাসনুভ রহমান।  কনা বলেন, ক্রিকেট নিয়ে গান এর আগেও গেয়েছি।  এবার গানটির কথা ও সুরে অন্য রকম একটা ব্যাপার আছে।  কোনাল বলেন, কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশি ক্রিকেটের বেশ কয়েকটি বড় আসরে গান করার সুযোগ হয়েছে।  এবারের গানটিও তারই ধারাবাহিকতা বলা যেতে পারে।  ২০ নভেম্বর হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।  সেদিন শিল্পীরা থিম সংটি পরিবেশন করবেন।  ‘এই দেশেতে ষোলো কোটি মানুষই ক্রিকেটমনা, কে জানে না পৃথিবীতে, আমাদের উম্মাদনা’ এমন কথায় বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট ঐতিহ্যকে তুলে ধরে বিপিএলের থিম সংটি লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ।  যৌথভাবে সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ সোহাইল ও তাসনুভ রহমান।  এরই মধ্যে বিভিন্ন দলের গান রেকর্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে।  চিটাগং ভাইকিংসের থিম সং-এ কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ।  গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন ইবরার টিপু। ’ ‘উড়াইয়া উড়াইয়া মারোরে, ধুম ধারাক্কা মারোরে, ঘুরাইয়া ফিরাইয়া ছাড়োরে, টর্নেডো ছুঁড়ে মারোরে’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল।  গানটির ভিডিও নির্মাণ করেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন।  বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গানটি প্রচার হচ্ছে।  কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, খেলাতো আমাদের রক্তে মিশে আছে।  আর ক্রিকেট সারাবিশ্বে আমাদের আলাদা করে পরিচিতি করে এনে দিয়েছে।  তাই আমার কাছে যখন প্রস্তাবটা এল, তখন আর না করতে পারিনি।  ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে উম্মাদনা হচ্ছে এটা ভেবেই গানটি গেয়েছি।  এ ছাড়া আমার বাড়ি চট্টগ্রামে।  সব মিলিয়ে ওদিকেই পাল্লাটা বেশি ভারী।  তবে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে আমি কোনো আঞ্চলিকতায় বিশ্বাস করি না।  আমি মনে করি সমগ্র দেশটাই আমাদের দেশ।  সব দলের প্রতি ভালোবাসা আছে।  এদিকে রবিউল ইসলাম জীবনের কথায় ও ইমন সাহার সুরে একই দলের জন্য আরও একটি থিম সংয়ে কণ্ঠ দিয়েছেন কিশোর ও ঐশি।  বিপিএল এর আরেক টিম বরিশাল বুলস এর জন্য একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীত তারকা আসিফ আকবর।  ‘বরিশাল বুলস কামাল কামাল, বরিশাল বুলস সামাল সামাল’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন রাজিব আহমেদ।  আর সুর করেছেন রাজেশ ঘোষ।  এ প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, বরিশাল বুলসের থিম সং গেয়েছি।  কারণ সেখানকার মানুষ আমাকে আগেই আপন করে নিয়েছে।  এ দলের সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি যুক্ত।  তারা আমাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরও বানিয়েছে।  কুমিল্লার জন্য শুভ কামনা থাকলো।

বিপিএলের অন্যতম দল রংপুর রাইডার্সের থিম সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন দিলশাদনাহার কনা ও পিএনএফ ব্যান্ডের ভোকাল পলাশনূর।  গানটি ফিচারিং করেছেন ডিজে রাহাত ও মীর মাসুম।  রঙ রঙ রঙ রঙিলা, রঙিলা রংপুর, রঙের ডানায় চড়ে উড়ব বহুদূর, রঙ রঙ রঙ রঙিলা, রঙিলা রংপুর, রাইডার্স অব হোপ রঙিলা রংপুর’ এমন কথায় গানটি লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন।  গানটি প্রসঙ্গে কনা বলেন, জীবনে অনেক থিম সং-এ কণ্ঠ দিয়েছি।  তবে এগানটির গুরুত্ব আমার কাছে একটু অন্যরকম।  কারণ গানটি বিপিএল নিয়ে।  সব মিলিয়ে গানটি আমার নিজের কাছেও ভালো লেগেছে।  আশা করি গানটি সবাই পছন্দ করবেন।  পলাশ বলেন, আমি রংপুরের ছেলে।  তাই রংপুর রাইডার্সের থিম সং গাওয়াটা বেশ উপভোগ করেছি।

konalজুটি হিসেবে সংগীতাঙ্গনে ফুয়াদ-মিলার অনেকেরই মনে আছে।  মিলার রমরমা ক্যারিয়ারে অনেকটা অংশ জুড়ে আছে ফুয়াদের অবদান।  ফুয়াদকে ছাড়া চার বছর সময় নিয়ে মিলার সর্বশেষ অ্যালবাম আনসেন্সরড।  প্রকাশ পায় এ বছর।  তবে ফুয়াদ-মিলার ভক্তদের জন্য নতুন খবর হচ্ছে ফের এক হয়েছেন তারা।  কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জন্য ধুম দাড়াক্কা গান করেছেন তাপস, ফুয়াদ আর পপ তারকা মিলা।  এর মাধ্যমে দীর্ঘ সময় পর কোনো গানে একসঙ্গে কাজ করলেন ফুয়াদ ও মিলা।  দীর্ঘদিন পর মিলা-ফুয়াদ জুটির নুতন গান গাওয়া যাবে মাঠে ময়দানে।  এবিষয়ে মিলা বলেন, প্রথমত ভালো লাগার বিষয় হলো এটি বিপিএলের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জন্য তৈরি গান।  দ্বিতীয়ত এর সংগীত পরিচালনা করেছেন ফুয়াদ ভাই।  তার সুরে আমার কণ্ঠের অনেক গানই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

ঢাকা ডাইনামাইটসও তাদের থিম সং প্রকাশ করেছে।  মাঠে খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে থিম সংয়ের টাইটেল নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফেয়ারলেস বা দুঃসাহসী’।  ঢাকা ডাইনামাইটসের থিম সং-এ কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় ব্যান্ড নেমেসিস এর জোহাদ।  থিম সংটি ব্যান্ড সংগীতের আদলেই করা হয়েছে।

বিপিএলের উম্মাদনার সাথে জনপ্রিয় সংগীত তারকা বালামও যুক্ত হয়েছেন।  সিলেট সুপার স্টারস দলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন তিনি।  শুধু ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেড়রই নন, এই প্রতিষ্ঠানের থিম সং ও তৈরি করেছেন তিনি।  বালাম জানান, চুক্তির অংশ হিসেবে এই দলের কয়েকটি খেলা মাঠে গিয়ে  দেখবেন।  পাশাপাশি বিভিন্ন প্রমোশনালেও অংশ নেবেন।  সিলেট সুপার স্টারস দলের থিম সং ‘হবে’তে কণ্ঠ দিয়েছেন বালাম।  র্যাপ পার্ট গেয়েছেন তৌফিক।  থিমসংটি লিখেছেন সাখাওয়াত আল মামুন।